আপনি যদি কোন আপনার নিজের অথবা আপনার ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটি ডোমেইন নাম এবং আপনার ওয়েবসাইটের সাইজ অনুসারে একটি হোস্টিং কিনতে হবে।কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে যেয়ে বেশ কিছু ভুল করে বসে।ফলে তাঁদের ওয়েবসাইট তৈরি করার যে উদ্দেশ্য থাকে সেটা কখনো সফলতার মুখ দেখেনা।
আমি আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে সেই বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো আমরা প্রায়ই আমাদের ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে যেয়ে ভুল করে বসি।আজকের এই লেখা আপনি শেষ পর্যন্ত পড়লে অবশ্যই আপনি ডোমেইন হোস্টিং কেনার সময়ে আর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো নিয়ে ভুল করবেন না সেই বিষয়ে আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিতে পারি।তাহলে অবশ্যই আজকের এই লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার সময় যে বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে
আমরা যখন আমাদের ওয়েবসাইট তৈরি করব বলে সিদ্ধান্ত নিই তখন প্রথমেই আমাদেরকে ডোমেইন নাম কিনতে হয় এবং এর পড়ে ডোমেইনকে হোস্টিংয়ের সাথে কানেক্ট করে আমাদের ওয়েবসাইটকে লাইভ করতে হয়।
আমার পরিচিত অনেকেই ডোমেইন কিনতে যেয়ে যে ভুল গুলো করেছিল এবং আমি তাঁদের নিচের পরামর্শ গুলো দিয়েছিলাম।আপনি যদি এই পরামর্শ গুলো মাথায় রেখে ডোমেইন কিনেন তাহলে আপনি কখনো ডোমেইন কিনে ঠকবেন না এই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন।
ডোমেইন কেনার সময় যে বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে সেগুলো হল-
- ফুল কন্ট্রোল দিবে কিনা জেনে নিতে হবে
- আপনার নাম ঠিকানা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে জেনে নিতে হবে
- ডোমেইন প্রোভাইডারের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া
- অন্য কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনে দিবে কিনা জেনে নেওয়া
- নিবন্ধনের মূল্য এবং রিনিউ মূল্য জেনে নেওয়া
- ডোমেইন কেনার পর ভেরিফাই করে নিতে হবে
- ভালো ডোমেইন নাম নির্বাচন করতে হবে
আপনি যদি ডোমেইন কেনার সময়ে উপরের ৭ টি বিষয়ে খেয়াল রাখেন তাহলে আপনি অবশ্যই আপনার ডোমেইন কেনার ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলা যায়।আমরা এখন উপরের এই ৭ টি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিব।
(১) ফুল কন্ট্রোল দিবে কিনা জেনে নিতে হবে
আপনি যে কোম্পানির কাছে থেকে ডোমেইন কিনতে চাচ্ছেন তাঁরা আপনাকে আপনার ডোমেইনের ফুল কন্ট্রোল দিবে কিনা সেই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে।এমন অনেক ডোমেইন কোম্পানি আছে যারা তাঁদের গ্রাহকদেরকে তাঁদের ডোমেইনের ফুল কন্ট্রোল প্রদান করে না এবং এই তাঁরা এই ফুল কন্ট্রোল তাঁদের কাছে রেখে রিনিউয়ের সময় অতিরিক্ত টাকা দাবী করে থাকে।
যদি কোন ডোমেইন কোম্পানি আপনাকে আপনার কেনা ডোমেইনের ফুল কন্ট্রোল না দিতে চায় তাহলে কখনো তাঁদের কাছে থেকে ডোমেইন কিনবেন না,এমনকি যদি তাঁরা ফ্রিতে ডোমেইন দিতে চায় তবু নিবেন না।কারন তাঁরা যদি দেখে যে আপনার ওয়েবসাইটের অবস্থান খুব ভালো তাহলে তাঁরা এত পরিমাণ টাকা দাবী করবে যে আপনি সেটা কল্পনাও করতে পারেন না।
(২) আপনার নাম ঠিকানা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে জেনে নিতে হবে
যখন আপনি কোন ডোমেইন বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে ডোমেইন কিনবেন তখন আপনাকে জেনে নিতে হবে যে তাঁরা আপনাকে আপনার নাম,ঠিকানা,ই-মেইল এবং ফোন নাম্বার ব্যবহার করে ডোমেইন কিনতে দিবে কিনা।যদি আপনার ডিটাইলস ব্যবহার করে কিনতে দেয় তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান থেকে ডোমেইন কেনা যাবে আর যদি না দেয় তাহলে সেই কোম্পানি থেকে ডোমেইন কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডোমেইন কোন নাম,ঠিকানা,ই-মেইল এবং ফোন নাম্বার ব্যবহার করে কেনা হয়েছে সেটা দেখা যাবে এই দুইটি ওয়েবসাইট থেকে।
(৩) ডোমেইন প্রোভাইডারের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া
আমার পরিচিত অনেকেই ব্যাঙের ছাতার মত জন্মানো ডোমেইন কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনে প্রতারিত হয়েছে।তাঁরা সেই প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে কম দামের অফার পেয়ে ডোমেইন কিনে পরবর্তীতে তাঁদের টাকা এবং ডোমেইন দুইটাই হারিয়েছে।সুতরাং, আপনি যে ডোমেইন কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনবেন সেই কোম্পানির ব্যাপারে আগে খোঁজ নিতে হবে।
ডোমেইন কোম্পানির ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার জন্য তাঁদের ফেসবুক পেজে গ্রাহকদের রিভিউ দেখে নিতে পারেন।এছার আপনার পরিচত যারা ডোমেইন সম্পর্কে বুঝে তাঁদের কাছে থেকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিতে পারেন।
(৪) অন্য কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনে দিবে কিনা জেনে নেওয়া
অনেক কোম্পানি আছে যারা প্রথমে খুব কমদামে ডোমেইন বিক্রয় করে থাকে।এখন আপনি যে ডোমেইন কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনবেন তাঁদের কাছে থেকে জেনে নিতে হবে যে তাঁরা সরাসরি ডোমেইন বিক্রি করে নাকি অন্য কোন কোম্পানি থেকে কিনে সেটা গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে।
আপনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে ডোমেইন কিনবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যদি দেখেন যে তাঁরা অন্য কোন ডোমেইন বিক্রয়কারী কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনে নিয়ে তারপর আপনাকে দিবে তাহলে যত সম্ভব এমন ডোমেইন প্রোভাইডারের থেকে দূরে থাকাই ভালো।
(৫) নিবন্ধনের মূল্য এবং রিনিউ মূল্য জেনে নেওয়া
অনলাইনে আপনি এমন অনেক ডোমেইন কোম্পানি পাবেন যারা আপনাকে মাত্র কয়েক সেন্ট খরচ করে ডোমেইন নাম কিনতে দিবে।কিন্তু বেশীরভাগ এই ধরনের কোম্পানি গুলো আপনার ডোমেইন যখন আপনি রিনিউ করতে চাইবেন তখন অনেক বেশী টাকা দাবী করবে।সেই সময়ে হয় আপনাকে তাঁদের দাবী মেনে নিতে হবে অথবা ডোমেইনটি ছেড়ে দিতে হবে।
সুতরাং,আপনি যখন ডোমেইন কিনতে চাইবেন তখন যেখান হতে কিনবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁদেরকে প্রথম রেজিস্ট্রেশন মূল্য এবং এক বছর পরের রিনিউ মূল্য সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
তবে জেনে রাখা ভালো কেউ আপনাকে কম দামে ডোমেইন দিচ্ছে মানেই সেই কোম্পানি খারাপ এমনটা ভাবার কোন কারন নাই।কারন এই প্রতিষ্ঠান গুলো তাঁদের প্রচারের জন্য প্রথমে কম দামে ডোমেইন বিক্রি করে থাকে।যেমন GoDaddy প্রথমে তাঁদের গ্রাহকদের কাছে মাত্র ০.৯৯ সেন্টে ডোমেইন বিক্রি করে এবং এক বছর পর আন্তর্জাতিক রিনিউ মূল্যে ডোমেইন রিনিউ করা সুযোগ দিয়ে থাকে।
(৬) ডোমেইন কেনার পর ভেরিফাই করে নিতে হবে
অনেক কোম্পানি আছে যাদের কাছে ডোমেইন কিনলে আপনাকে আপনার এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য একটা ই-মেইল ভেরিফাই করতে বলবে সেটা যত দ্রুত সম্ভব মেইল পাওয়ার সাথে সাথে করে নিতে হবে।ভেরিফাই করার জন্য শুধু মেইলে একটা ভেরিফাই লিংক থাকে সেটায় ক্লিক করলেই ডোমেইন ভেরিফাই হয়ে যাবে।
আপনি যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য ডোমেইন ভেরিফাই না করেন তাহলে আপনার ডোমেইন সাসপেন্ড করে দেওয়া হবে এবং পরবর্তীতে ডোমেইন কোম্পানি সাপোর্টে কথা বললে তাঁরা আবার মেইল সেন্ট করলে মেইলে থাকা লিংকে ক্লিক করে ডোমেইন ভেরিফাই করে নিতে হবে।
(৭) ভালো ডোমেইন নাম নির্বাচন করতে হবে
আপনি যখন আপনার নিজের ব্যাক্তিগত ওয়েবসাইট অথবা আপনার বিজনেস প্রতিষ্ঠানের নামে ডোমেইন কিনবেন তখন অবশ্যই আপনাকে একটি ভালো নামের এবং সহজে মনে রাখা যায় সেই ধরনের ডোমেইন নাম কিনতে হবে।
ডোমেইন কেন সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে আমার লেখা নিচের দুইটি আর্টিকেলে-
- কিভাবে একটি ভালো ডোমেইন নাম নির্বাচন করা যায়?( ১০ টি এক্সপার্ট টিপস)
- ডোমেইন নাম কেনার আগে যে বিষয় গুলো অবশ্যই চেক করে নিবেন
ডোমেইন নাম কেনার ব্যাপারে আমাদের যেসকল বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সেই বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানলাম।এখন আমাদের ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কেনার সময়ে আমাদের যে সকল বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে সেই বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানব।
হোস্টিং কেনার সময় যে বিষয় গুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে সেগুলো হল-
- টাকা বাঁচানোর চেষ্টা না করা
- অরজিন্যাল লাইসেন্স ব্যবহার করছে কিনা জেনে নিতে হবে
- সাপোর্ট কোয়ালিটি চেক করা
- তাঁদের ব্যবসার সময়কাল জেনে নেওয়া
- টার্গেটেড লোকেশন অনুসারে হোস্টিংয়ের সার্ভার লোকেশন সিলেক্ট করা
- সিকিউরিটি সিস্টেম সম্পর্কে জেনে নেওয়া
- ব্যাকআপ পলিসি জেনে নেওয়া
- তাঁদের বিজনেসের ধরন সম্পর্কে জেনে নেওয়া
- আইপি রেপুটেশন সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া
- হোস্টিংয়ের রিসোর্স সম্পর্কে জেনে নিতে হবে
এখানে আমি যে ১০ টি বিষয়ের উল্লেখ করেছি আমি নিজেই এই ১০ বিষয় সম্পর্কে খুব ভালোভাবে খোঁজ খবর নিয়ে তারপর ভালো হোস্টিং কোম্পানি মনে হলে তবেই সেই প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে হোস্টিং কিনি।আর যদি দেখি এই ১০ টি বিষয়ের কোন একটা নেগেটিভ তাহলে সেই হোস্টিং কোম্পানি থেকে কখনো আমার ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনি না।
(১) টাকা বাঁচানোর চেষ্টা না করা
আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছে যারা সামান্য কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য খারাপ মানের হোস্টিং কিনে থাকে।কিন্তু আপনি জানেন কি এই অল্প কিছু টাকা বাঁচাতে যেয়ে আপনাকে কত বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে?
প্রথমত, আপনি যদি সামান্য টাকা বাঁচানোর জন্য আপনার ওয়েবসাইটের জন্য যে ধরনের হোস্টিংয়ের প্রয়োজন সেই ধরনের হোস্টিং না কিনেন তাহলে দিনের বেশীরভাগ সময় আপনার ওয়েবসাইট ডাউন থাকতে পারে অথবা বেশী ভিসিটর প্রবেশ করলেও ডাউন হয়ে যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, আপনি যদি অল্প কিছু টাকা বাঁচানোর জন্য কোন খারাপ হোস্টিং প্রোভাইডারের কাছে থেকে হোস্টিং কিনেন তাহলে তাঁরা আপনার ওয়েবসাইটের কথা চিন্তা না করে যেকোনো সময়ে তাঁদের ব্যবসা গুঁটিয়ে নিতে পারে।যদি এমনটা হয় তাহলে আপনার সাইটের সকল কন্টেন্ট হারিয়ে যাবে এবং আপনার সকল পরিশ্রম নষ্ট হয়ে যাবে।
সুতরাং, হোস্টিং কেনার সময়ে টাকা বাঁচানোর চিন্তা না করে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য সঠিক হোস্টিং প্যাকেজ এবং সঠিক হোস্টিং কোম্পানি নির্বাচন করতে হবে।
(২) অরজিন্যাল লাইসেন্স ব্যবহার করছে কিনা জেনে নিতে হবে
আপনি যে কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা আপনাকে সি-প্যানেল এর অরজিন্যাল লাইসেন্স এবং সি-প্যানেলে থাকা সফটওয়্যার গুলোর অরজিন্যাল লাইসেন্স ব্যবহার করতে দিবে কিনা সেই ব্যাপারে তাঁদের সাপোর্টে কথা বলে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে।যদি তাঁরা আপনাকে অরজিন্যাল লাইসেন্স ব্যবহার করার সুযোগ দেয় তাহলে সেখান হতে হোস্টিং কিনতে হবে আর যদি না দেয় তাহলে সেই কোম্পানি থেকে কখনো হোস্টিং কিনবেন না।
(৩) সাপোর্ট কোয়ালিটি চেক করা
আপনি যখন কোন কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনবেন বলে সিদ্ধান্ত নিবেন তখন তাঁদের গ্রাহক সাপোর্ট কেমন সেই ব্যাপারে যাচাই করে নিতে হবে।এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যে আমিত তাঁদের কোন সার্ভিসই কিনিনি তাহলে কিভাবে সাপোর্ট সম্পর্কে জানব?এটার সহজ উত্তর হল তাঁদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া ই-মেইল,ফোন নাম্বার অথবা তাঁদের লাইভ চ্যাটে কেনার আগে কথা বলে নেওয়া।যদি তাঁরা ভালোভাবে এবং দ্রুত আপনার প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেয় তাহলে বুঝে নিবেন তাঁদের সাপোর্ট অনেক ভালো।আর যদি দেখেন অনেক সময় নিচ্ছে সাপোর্টের উত্তর দিতে এবং তাঁদের কথা গুলোও প্রফেশনাল নয় তাহলে সেই কোম্পানি থেকে কখনো হোস্টিং কিনবেন না।
(৪) তাঁদের ব্যবসার সময়কাল জেনে নেওয়া
আপনি যখন কোন কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনতে চাইবেন তখন অবশ্যই আপনাকে তাঁদের ব্যবসার সময়কাল জেনে সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।যদি দেখেন যে তাঁরা অনেক বছর ধরে হোস্টিং সেবা প্রদান করে আসছে তাহলে চোখ বন্ধ করে তাঁদের থেকে হোস্টিং কিনে নিবেন।কারন যারা এত দীর্ঘ সময় ধরে মার্কেটে আছে তাঁরা নিশ্চয় খারাপ সার্ভিস দিয়ে মার্কেটে টিকে নেই।আর যদি দেখেন হোস্টিং কোম্পানির ব্যবসার সময়কাল খুব কম তাহলে আপনার উচিত হবে এমন প্রতিষ্ঠানের সেবা না নেওয়া।
(৫) টার্গেটেড লোকেশন অনুসারে হোস্টিংয়ের সার্ভার লোকেশন সিলেক্ট করা
আপনি যখন কোন হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে যাবেন তখন তাঁরা আপনাকে হোস্টিংয়ের সার্ভার লোকেশন সিলেক্ট করতে বলবে।এখন আপনার ওয়েবসাইটের টার্গেটেড ভিসিটর যেই দেশের সেই দেশের সার্ভার লোকেশন নির্বাচন করতে হবে।
যেমনঃ
- আপনার ওয়েবসাইটের প্রাথমিক টার্গেটেড ভিসিটর যদি আমেরিকার হয় তাহলে আপনাকে ইউএসএ এর সার্ভার লোকেশন নির্বাচন করতে হবে।
- আপনার ওয়েবসাইটের প্রাথমিক টার্গেটেড ভিসিটর যদি ইউরোপের হয় তাহলে আপনাকে জার্মানির সার্ভার লোকেশন নির্বাচন করতে হবে।
- আপনার ওয়েবসাইটের প্রাথমিক টার্গেটেড ভিসিটর যদি এশিয়ার হয় তাহলে আপনাকে সিঙ্গাপুরের সার্ভার লোকেশন নির্বাচন করতে হবে।
- আপনার ওয়েবসাইটের প্রাথমিক টার্গেটেড ভিসিটর যদি বাংলাদেশের হয় তাহলে আপনাকে বাংলাদেশের BDIX Hosting কিনতে হবে।
(৬) সিকিউরিটি সিস্টেম সম্পর্কে জেনে নেওয়া
যখন আপনি কোন কোম্পানি থেকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনবেন তখন আপনাকে তাঁরা কতটা নিরাপত্তা প্রদান করবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে।কারন আপনার হোস্টিংয়ের যদি নিরাপত্তা জনিত দুর্বলতা থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটটি ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে আবার খুব সহজেই হ্যাকাররা আপনার ওয়েবসাইট হ্যাক করে মূল্যবান তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।সুতরাং, আপনার হোস্টিংয়ের শতভাগ সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে হবে।
(৭) ব্যাকআপ পলিসি জেনে নেওয়া
আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টের নিরাপত্তার জন্য ব্যাকআপ সিস্টেম জেনে নেওয়া জরুরী।হোস্টিং কেনার আগেই সেই হোস্টিং কোম্পানির ব্যাকআপ পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।তাঁরা কি প্রতিদিন আপনার সাইটের ব্যাকআপ নিবে নাকি প্রতি সপ্তাহে নিবে নাকি প্রতি মাসে একবার এই সম্পর্কে হোস্টিং কেনার আগেই জেনে নিতে হবে।তবে আমার মতামত হল যেই হোস্টিং কোম্পানি প্রতিদিন আপনার সাইটের ব্যাকআপ নিবে তাঁদের থেকে সার্ভিস গ্রহন করা।
কারন তারা আপনার ওয়েবসাইটে থাকে কন্টেন্ট গুলোর প্রতিদিনের ব্যাকআপ নিয়ে রাখবে।যদি আপনার সাইটে কোন প্রব্লেম হয় তাহলে আপনি খুব সহজেই তাঁদের সাথে কথা বলে সর্বশেষ দিন পর্যন্ত থাকে কন্টেন্ট গুলোর ব্যাকআপ নিয়ে সাইট আব্র পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
(৮) তাঁদের বিজনেসের ধরন সম্পর্কে জেনে নেওয়া
আপনি যে কোম্পানি থেকে ডোমেইন কিনবেন আপনাকে তাঁদের বিজনেসের ধরন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।তাঁরা তাঁদের বিজনেস সিঙ্গেল প্রোপ্রাইটারশিপ নাকি প্রাইভেট লিমিটেডে বিজনেস পরিচালনা করছে সেই ব্যাপারে জেনে নিতে হবে।যদি দেখেন যে তাঁরা প্রাইভেট লিমিটেড হিসাবে বিজনেস করছে তাহলে তাঁদের থেকে আপনি হোস্টিং নিলে আপনি সম্পূর্ণ ঝুঁকি মুক্ত থাকবেন।
(৯) আইপি রেপুটেশন সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া
আপনি যে কোম্পানি থেকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনতে চান তাঁদের মেইল সার্ভারের আইপি রেপুটেশন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে।মেইল সার্ভারের আইপি রেপুটেশন চেক করা যাবে SenderScore ওয়েবসাইট থেকে।
(১০) হোস্টিংয়ের রিসোর্স সম্পর্কে জেনে নিতে হবে
আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য যে হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে চান সেই প্যাকেজে আপনি কি পরিমাণ হোস্টিং রিসোর্স (ডিস্ক স্পেস,ব্যান্ডউইথ,র্যাম,সিপিইউ) পাবেন সেই সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।শেয়ার হোস্টিংয়ে কমপক্ষে ১ কোর সিপিইউ এবং ১ জিবি র্যাম থাকেতেই হবে।আপনি যদি অনেক কম হোস্টিং রিসোর্স (ডিস্ক স্পেস,ব্যান্ডউইথ,র্যাম,সিপিইউ) সহ হোস্টিং প্যাকেজ কিনেন তাহলে দেখবেন সাইট অভারলোড হয়ে ডাউন হয়ে যাবে।
আমার শেষ কথা
আমি আজকের এই লেখায় ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার সময়ে আমাদেরকে যে সকল বিষয় গুলোর প্রতি নজর রাখতে হবে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সম্পর্কে যা যা আলোচনা করলাম আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার সময়ে এই বিষয়গুলো মেনে চলেন তাহলে আপনি কখনো আপান্র ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে ঠকবেন না বলেই আমি বিশ্বাস করি।