সর্বশেষ সংবাদ

স্কুলছাত্রকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

রাতের আঁধারে ফরিদপুরের এক স্কুলছাত্রকে ধরে নিয়ে বেধড়ক মারধরের পর মাটি খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার শহরের আলীপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে ওই ছাত্রের পরিবার।

সদর উপজেলার বড় মাধবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোস্তাক মাতুব্বর বলেন, শনিবার রাতে তাঁর ১৩ বছর বয়সী স্কুলপড়ুয়া ছেলে জিহাদ মাতুব্বর ওয়াজ শুনতে যাওয়ার সময় এলাকার কয়েকজন বখাটে কিশোর তাকে ধরে বেদম মারধর করে। পরে একটি কবরস্থানে নিয়ে কবর খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তারা জিহাদকে তার বাবার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকাও নিয়ে আসতে বলে।

তিনি জানান, তাঁর চার ছেলেমেয়ের মধ্যে জিহাদই বড়। সে কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

এ ঘটনার পর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন তরুণ জিহাদকে মারতে মারতে জামার কলার ধরে একটি কবরস্থানে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে পৌঁছে আবারও তাকে মারধর করে। এ সময় এক তরুণকে কোদাল দিয়ে গর্ত খুঁড়তে দেখা যায়। জিহাদকে ওই যুবক বলে, ‘তোরে জবাই করব না, জ্যান্তই পুঁইত্যা ফ্যালাব। কোহনে কোহনে ক? জায়গা পছন্দ কর।’ তখন তাদের একজনকে কবর খুঁড়তে খুঁড়তে হাসিতে ফেটে পড়তে দেখা যায়। এর পর কেউ একজন সেখানে এক যুবককে ফোন ধরিয়ে দেওয়ার পরে তাদের মাঝে কথাবার্তা হয়। এর কিছুক্ষণ পর যুবকটি জিহাদকে ছেড়ে দিয়ে বলে, ‘বাঁইচ্যা গেলি আইজক্যার মতো। আর কবি, ক’? তারপর তাকে সজোরে কিল-ঘুসি মারতে থাকে তারা।

জিহাদের মা মারিয়া আকতার জানান, ভয়ে তাঁর ছেলে বাড়িতে পৌঁছে বমি করে। রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এখনও সেই ট্রমায় আক্রান্ত।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জিহাদ জানায়, কয়েক দিন আগে তার চাচাতো ভাইদের বাড়ির পেছনে নদীর পাড়ে জড়ো হয়ে শোরগোল করতে থাকা এক দল বখাটের কাছে সেখানে কারা বলে উঁচু স্বরে জানতে চেয়েছিল। এই অপরাধে ওই দিন সন্ধ্যায় প্রথমে তাকে এক দফা মারধর করা হয়।

এর পর শনিবার রাতে ওয়াজের মাঠে যাওয়ার সময় ওই যুবকরা তাকে দোকান থেকে সিগারেট কিনে আনতে বলে এবং সিগারেট কেনার ভিডিও করে। তখন তার বাবাকে সিগারেট কেনার ভিডিও দেখানোর ভয় দেখিয়ে তাকে জিম্মি করে নেয়।

এ ঘটনায় তার বাবা মোস্তাক মাতুব্বর বাদী হয়ে রোববার রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এতে সিফাত, মাসুম, মারুফ, আরাফাত, সজল, সাকিলসহ আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি আসাদউজ্জামান বলেন, জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাতেই পুলিশ একাধিক অভিযান চালিয়েছে।

সোর্সঃ সমকাল অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *