সর্বশেষ সংবাদ

ভারতের পার্লামেন্টে বাংলাদেশকে নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের পার্লামেন্টে শেখ হাসিনা ইস্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং।

ভারতে অবস্থানকালীন শেখ হাসিনার বক্তব্য সরাসরি প্রচারের পর দেশে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক সরকারের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। এসব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টে শেখ হাসিনা ইস্যুটি আলোচনায় উঠে আসে।

ভারতের আইনপ্রণেতারা জানতে চান, শেখ হাসিনার বিষয়ে দেশটির সরকার কী অবস্থান নিয়েছে। বিজেপি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন এবং এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে এবং ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন। কেরালার সাংসদ জন বিট্টাস সংসদে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেন:

বাংলাদেশ কি শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছে? যদি চেয়ে থাকে, তাহলে ঢাকা কী কারণ দেখিয়েছে? এবং ভারত সরকার কী জবাব দিয়েছে?

উত্তরে কীর্তিবর্ধন সিং জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে প্রবেশের আগে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধের ভিত্তিতেই তার প্রত্যর্পণ চাওয়া হয়েছে। তবে ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে কোনো জবাব দেয়নি।

এর আগেও শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে গেল ডিসেম্বরে নয়া দিল্লিকে কূটনৈতিক চিঠি পাঠায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।ওই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছিল ভারত সরকার ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশের চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন । তবে, ওই চিঠির বৈধতা যাচাইসহ আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখার কথা জানিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি ভারত ।

কীর্তিবর্ধন সিং জানান, বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়েছে, তবে ভারত এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে, শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে বাংলাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় ভারতও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে “দুর্ভাগ্যজনক” হিসেবে অভিহিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তবে বাংলাদেশ সরকার দাবি করেছে, ভারতের মাটি থেকে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচারই সাম্প্রতিক অস্থিরতার মূল কারণ।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকে তলব করে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। কূটনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি দুই দেশের সম্পর্কের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।

সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *