সর্বশেষ সংবাদ

ডেডিকেটেড সার্ভার কি?ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

আমার আর্টিকেলে আপনারা ভিপিএস সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনেছেন।সেই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ভিপিএস সার্ভার কি?ভিপিএস সার্ভার কিভাবে কাজ করে এবং ভিপিএস এর সুবিধা অসুবিধা এবং ভিপিএস সার্ভারের প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম।সেই আর্টিকেলে আমি বলেছিলাম যে প্রতিটা ভিপিএস সার্ভার কোন একটি ডেডিকেটেড সার্ভারকে ভার্চুয়ালাইজেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভাগ করে তৈরি করা হয়।

পূর্বের আর্টিকেল পড়ুন এখানেঃ ভিপিএস সার্ভার কি?ভিপিএস সার্ভার কিভাবে কাজ করে?

আজকের এই পোস্টে আমরা ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানব।আজকের পোস্টের আলোচনার মূল বিষয় গুলো হল-

  1. ডেডিকেটেড সার্ভার কি?
  2. ডেডিকেটেড সার্ভার কিভাবে তৈরি করা হয়?
  3. ডেডিকেটেড সার্ভার কিভাবে কাজ করে?
  4. ডেডিকেটেড সার্ভারের প্রকারভেদ গুলো কি কি?
  5. ডেডিকেটেড সার্ভার কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়?
  6. ডেডিকেটেড সার্ভারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো কি কি?

আজকের আর্টিকেলে আমরা ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে উপরের সব গুলো প্রশ্নের উত্তর বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করব।এবং আমি আশা করি যে এই আর্টিকেল যদি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারবেন।তাহলে চলুন অযথা কথা না বাড়িয়ে ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে আলোচনা শুরু করা যাক।

(১) ডেডিকেটেড সার্ভার কি?

যখন কোন কম্পিউটারকে সম্পূর্ণ সার্ভার হিসাবে ব্যবহার করা হবে তখন তাঁকে ডেডিকেটেড সার্ভার বলা হয়ে থাকে।যেকোনো ডেডিকেটেড সার্ভারের মূল কাঠামো (হার্ড ডিস্ক,র‍্যাম,প্রসেসর ইত্যাদি) সে নিজেই ব্যাবহার করবে এবং কখনো কোন অবস্থাতেই সে অন্য কারও সাথে তার কাঠামো শেয়ার করবে না।তবে আপনি চাইলেই ভার্চুয়ালাইজেশন সফটওয়্যার দিয়ে ভাগ করে কয়েকটি ভার্চুয়াল বা ভিপিএস সার্ভার তৈরি করে নিতে পারবেন।

(২) ডেডিকেটেড সার্ভার কিভাবে তৈরি করা হয়?

ডেডিকেটেড সার্ভার তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি খুব ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটারকে আইপি এড্রেস দ্বারা ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করা হয় এবং তাতে ব্যবহারকারীর পছন্দ মত অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করে দেওয়া হয় এবং একজন ডেডিকেটেড সার্ভার ইউজার চাইলেই যখন তখন তার ডেডিকেটেড সার্ভারের অপারেটিং সিস্টেম এবং হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করে নিতে পারে।এবং তাতে প্রচুর পরিমানে রিসোর্স রাখা হয় যাতে করে এর ব্যবহারকারী এটি ব্যবহার করে সাচ্ছন্দবোধ করে।তবে একজন ডেডিকেটেড সার্ভারের ব্যবহারকারী এই রিসোর্স অন্য কারও সাথে শেয়ার করে ব্যবহার করতে পারে।আর এই শেয়ার করার সুযোগকে কাজে লাগিয়েই ভার্চুয়ালাইজেশন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে যেকোনো ডেডিকেটেড সার্ভারের আন্ডারে কয়েকটি ভিপিএস সার্ভার তৈরি করা যায়।

(৩) ডেডিকেটেড সার্ভার কিভাবে কাজ করে?

আমরা আগেই জেনেছি যে যেকোনো সার্ভার মূলত একটি কম্পিউটার যা সর্বক্ষণ ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থেকে আমাদের সেবা প্রদান করে।তবে অন্য সার্ভার গুলোতে আপনি চাইলেই অপারেটিং সিস্টেম পরিবর্তন,হার্ড ডিস্ক,র‍্যাম,প্রসেসর ইত্যাদি পরিবর্তন করতে পারবেন না।কিন্তু আপনি যখন ডেডিকেটেড সার্ভার ব্যাবহার করবেন তখন সেই আপনার ব্যাক্তিগত কম্পিউটারের মতই ব্যবহার করতে পারবেন।

ডেডিকেটেড সার্ভার মূলত নিরিবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ এবং একটি রিয়াল আইপি এড্রেসের মাধ্যমে কাজ করে।এখানে ইন্টারনেট ২৪ ঘণ্টার জন্য আপনার কম্পিউটারকে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে এবং আইপি এড্রেস দ্বারা আপনার ডেডিকেটেড সার্ভারের সাথে (পড়ুন কম্পিউটারের সাথে) অন্য কম্পিউটার অথবা মোবাইল ডিভাইস ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে কানেক্ট হতে পারে।

বেশীরভাগ ডেডিকেটেড সার্ভার যেহেতু যাদের ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমানে ভিসিটর আছে তাঁরা ব্যবহার করে থাকে সেই কারনে ডেডিকেটেড সার্ভারের কাজ করার ধরন এই রকমই।

(৪) ডেডিকেটেড সার্ভারের প্রকারভেদ গুলো কি কি?

আমারা আগে জেনেছিলাম যে ভিপিএস সার্ভার মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে তবে সেবার ধরনের উপরে নির্ভর করে ডেডিকেটেড সার্ভারকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

সেগুলো হল-

  1. ম্যানেজ ডেডিকেটেড সার্ভার
  2. আন-ম্যানেজ ডেডিকেটেড সার্ভার এবং
  3. বেয়ার মেটাল ডেডিকেটেড সার্ভার

আমরা এখানে ডেডিকেটেড সার্ভারের প্রকারভেদ গুলোর নাম সম্পর্কে জানলাম।এখন এমি আপানাদেরকে খুব সহজভাবে এই তিন রকমের ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে বুঝানোর চেষ্টা করব।

  • ম্যানেজ ডেডিকেটেড সার্ভারঃ আপনি যদি কোন সার্ভার কোম্পানি থেকে ডেডিকেটেড সার্ভারের সেবা গ্রহন করেন আর সেই কোম্পানি গুলো যদি সম্পূর্ণ রেডিমেড কোন ডেডিকেটেড সার্ভার আপনাকে ব্যবহার করতে দেয়।অর্থাৎ, আপনাকে এই ধরনের সার্ভার নেওয়ার পরে আপনাকে কোন অপারেটিং সিস্টেম অথবা হার্ডওয়্যার যোগ করতে হয়না।শুধু বিল পে করবেন আর ব্যবহার করবেন ব্যাপারটা এমন হয় তাহলে সেই ডেডিকেটেড সার্ভারকে ম্যানেজ ডেডিকেটেড সার্ভার বলা হয়ে থাকে।
  • আন-ম্যানেজ ডেডিকেটেড সার্ভারঃ যখন কোন ডেডিকেটেড সার্ভারের ম্যানেজ করার দায়িত্ব সেই ডেডিকেটেড সার্ভারের ব্যবহারকারীর উপরে থাকে তখন সেটাকে আন-ম্যনেজ ডেডিকেটেড সার্ভার বলা হয়।এই ধরনের সার্ভারের সফটওয়্যার ইন্সটল এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত সকল দায়িত্ব ব্যবহারকারীর।
  • বেয়ার মেটাল ডেডিকেটেড সার্ভারঃ যখন কোন সার্ভার ব্যবহারকারী কোন একটি সার্ভারের কোন একটি নির্দিষ্ট অংশ ভারা না নিয়ে বরং সেই সার্ভারটি সম্পূর্ণ ভারা নিবে তখন সেটাকে বেয়ার মেটাল ডেডিকেটেড সার্ভার বলা হয়ে থাকে।এই ধরনের সার্ভার গুলোতে ব্যবহারকারীরা তাঁদের পছন্দ মত অপারেটিং সিস্টেম,সফটওয়্যার ইন্সটল এবং তাঁদের পছন্দ অনুসারে হার্ডওয়্যার পছন্দ এবং পরিবর্তন করতে পারে।

(৫) ডেডিকেটেড সার্ভার কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়?

ডেডিকেটেড সার্ভার গুলো মূলত বড় বড় ওয়েবসাইটের ওয়েব সার্ভার হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।এছারা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস এবং পেমেন্ট গেটওয়ের জন্যও ডেডিকেটেড সার্ভার ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।কারন বড় বড় ওয়েবসাইট,অ্যাপস এবং পেমেন্ট গেটওয়েতে সব সময়ই অন্যদের চাইতে বেশী ওয়েব ট্রাফিক থাকে ফলে এর জন্য ছোট হোস্টিং প্যাকেজ গুলো যথেষ্ট নয়।আর এই কারনেই যাতে বেশী ভিসিটরের কারনে যাতে করে তাঁদের সার্ভিস অথবা ওয়েবসাইট ডাউন না হয় সেই কারনে ডেডিকেটেড সার্ভার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এছারাও আমরা যেসব ভিপিএস সার্ভার এবং শেয়ার হোস্টিং ব্যবহার করে থাকি সেগুলো মূলত এই ডেডিকেটেড সার্ভার থেকেই তৈরি করে ছোট ছোট ভিপিএস প্যাকেজ অথবা শেয়ারড হোস্টিং প্যাকেজ তৈরি করে আমাদের কাছে বিক্রি করা হয়।

(৬) ডেডিকেটেড সার্ভারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো কি কি?

আমরা উপরে আলোচনার মাধ্যমে জানলাম যে ডেডিকেটেড সার্ভার কি,কিভাবে এই সার্ভার তৈরি করা হয় এবং কিভাবে ডেডিকেটেড সার্ভার কাজ করে এবং একই সাথে আমরা এটাও জানলাম যে কত প্রকারের ডেডিকেটেড সার্ভার হয় এবং কি কাজে এই ধরনের সার্ভার গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে।আমরা এখন ডেডিকেটেড সার্ভারের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জানব।

ডেডিকেটেড সার্ভারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো নিচের টেবিলে উপস্থাপন করা হল-

নামডেডিকেটেড সার্ভারের সুবিধাডেডিকেটেড সার্ভারের অসুবিধা
হার্ডওয়্যারআপনি চাইলেই আপনার ডেডিকেটেড সার্ভারের হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করে নিতে পারবেন আপনার প্রয়োজন অনুসারে।ডেডিকেটেড সার্ভারের সুবিধা হার্ডওয়্যার পরিবর্তন করা অনেক ব্যয়বহুল।
অপারেটিং সিস্টেমআপনি আপনার পছন্দ অনুসারে উইন্ডোজ,লিনাক্স অথবা যেকোনো ধরনের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।অসুবিধা নাই
সফটওয়্যার ইন্সটলআপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে ডেডিকেটেড সার্ভারে আপনার দরকারী সফটওয়্যার গুলো ইন্সটল এবং ব্যবহার করতে পারবেন।অসুবিধা নাই
রিসোর্স ব্যবহারআপনি আপনার ডেডিকেটেড সার্ভারের সকল রিসোর্স যেমনঃ ব্যান্ডউইথ,ডিস্ক স্পেস এবং গতি সম্পূর্ণ নিজে ব্যাবহার করতে পারবেন এবং চাইলেই অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।অন্যদের সাথে রিসোর্স শেয়ার করার ফলে আপনার কাজে কিছুটা গতি কমে আসতে পারে।
ম্যানেজমেন্টআপনি যদি আপনার ডেডিকেটেড সার্ভারের অধীনে ভিপিএস সার্ভার তৈরি করতে চান তাহলে খুব সহজেই সেগুলো মানেজ করতে পারবেন।অসুবিধা নাই
দামঅন্য সার্ভারের তুলনায় ডেডিকেটেড সার্ভারের দাম অনেক বেশী।দাম বেশী হবার কারনে এটা সবাই ব্যবহার করার সুযোগ পায়না।

আমার শেষ কথা

আমরা আজকের পোস্টে ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কে জেনেছি সেগুলো আমাদের সার্ভার সম্পর্কিত জ্ঞান আরও একটু বৃদ্ধি করবে এতে কোন সন্দেহ নাই।আপনি যদি কোন ওয়েবসাইটের মালিক হয়ে থাকেন তাহলে এখন থেকে ডেডিকেটেড সার্ভার কিনতে গেলে আজকের পোস্টে আলোচিত বিষয় গুলো আপনার জন্য অনেক সহায়ক হবে বলেই আমি মনে করি।এরপরেও আপনার যদি ডেডিকেটেড সার্ভার সম্পর্কিত আর কোন জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে অবশ্যই সেই প্রশ্নটি এই পোস্টের কমেন্টে করুন আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *