সর্বশেষ সংবাদ

ডাটা এন্ট্রি করে টাকা আয় করা সম্ভব কি?ডাটা এন্ট্রি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

আমরা যদি ডাটা শব্দের আভিধানিক অর্থ খুঁজতে যাই তাহলে এর আভিধানিক অর্থ হবে উপাত্ত।তবে যেহেতু এখানে আমারা টেকনোলজির সাথে সম্পর্কিত ডাটা এন্ট্রি কাজ সম্পর্কে আলোচনা করব সেহেতু আমাদের টেকনোলজিতে ডাটা বলতে যা বুঝানো হয় সেটা জানতে হবে।যখন কোন টেক রিলেটেড কাজের জন্য ডাটা শব্দের ব্যাবহার করা হয়ে থাকে তখন ডাটা বলতে এখানে অডিও,ভিডিও,ছবি অথবা টেক্সট রিলেটেড বিভিন্ন ধরনের তথ্যকে বুঝানো হয়ে থাকে।

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা ডাটা এন্ট্রি কাকে বলে,ডাটা এন্ট্রিতে কি ধরনের কাজ করতে হয় এবং ডাটা এন্ট্রির কাজ করে টাকা আয় করা সম্ভব কিনা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানব।তাহলে চলুন মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

ডাটা এন্ট্রি কি?

আমরা আর্টিকেলের শুরুতেই জেনেছি যে ডাটা কাকে বলে।এখন এখানে যেহেতু ডাটা শব্দের সাথে আবার এন্ট্রি শব্দ আছে তাহলে ডাটা এন্ট্রির অর্থ হচ্ছে তথ্য প্রবেশ করানো।অর্থাৎ,বিভিন্ন সোর্স থেকে বিভিন্ন ধরনের বা একই ধরনের ভিন্ন ডাটা সংগ্রহ করে কোন একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যার অথবা কোন ওয়েব অ্যাপসে প্রবেশ করানো হলে তখন তাঁকে ডাটা এন্ট্রি বলা হয়ে থাকে।

উধাহরন হিসাবে বলা যায় যে, কেউ আপনাকে বলল বাংলাদেশের জন পাবলিক এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি আছে তাদের ঠিকানা,ফোন নাম্বার,ইমেইল এবং ওয়েবসাইটের ঠিকানা সংগ্রহ করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফাইলে সেভ করতে হবে অথবা তাদের ওয়েবসাইটে এন্ট্রি করতে দিতে হবে।তখন এটাকে আমরা ডাটা এন্ট্রির কাজ বলা হবে।তবে ডাটা এন্ট্রির কাজ যে শুধু টেক্সট ভিত্তিক তথ্য নির্ভর হবে এমনটা নয়।ডাটা এন্ট্রির কাজ গুলো অডিও,ভিডিও,ছবি রিলেটেড তথ্য সংগ্রহ এবং এন্ট্রিরও হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ বাই মি এ কফি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কিভাবে আয় করা যায়?

ডাটা এন্ট্রির কাজ করে কি টাকা আয় করা সম্ভব?

অবশ্যই অন্যান্য অনলাইন কাজের মত ডাটা এন্ট্রির কাজেরও প্রচুর চাহিদা আছে।আর আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজে অভজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি এই কাজ করে ভালো পরিমানের টাকা আয় করতে পারবেন।তবে এই কাজের জন্য আপনাকে অবশ্যই নিচের বিষয়গুলোতে অভিজ্ঞ হতে হবে।

  1. আপনাকে অবশ্যই ভালো ইংরেজি জানতে হবে
  2. কম্পিউটারে দ্রুত টাইপ করা জানতে হবে এবং
  3. অবশ্যই কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকতে হবে

আমরা যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের উপরের তিনটি বিষয়ে ভালো হতে হবে।এখন আমরা এই ৩ টি বিষয়ে সংক্ষিপ্তভাবে জেনে নিব।

(১) ভালো ইংরেজি জানতে হবে

ডাটা এন্ট্রির বেশীরভাগ কাজ গুলো বাহিরের দেশের ক্লাইন্টের সাথে করতে হবে এবং তাদের ভাষা ইংরেজি এবং যে কাজ গুলো করতে হবে সেই কাজ গুলোও বেশীরভাগ ইংরেজি ভাষাতেই করতে হবে।সুতরাং আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চান তাহলে আপনার ক্লাইন্টের সাথে যোগাযোগ এবং আপনাকে দেওয়া কাজ গুলো কমপ্লিট করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি জানতে হবে।

আরও পড়ুনঃ টিকটক থেকে আয় করার সেরা ৮ টি উপায়

(২) দ্রুত কম্পিউটার টাইপ করতে পারা

ডাটা এন্ট্রির কাজ গুলো সম্পূর্ণ টাইপিং নির্ভর হয়ে থাকে।আর এই কারনেই আপনাকে খুব দ্রুত এবং নির্ভুল টাইপ করা জানতে হবে।আপনার যদি টাইপিং স্পিড অনেক কম হয় তাহলে অনলাইনের বিভিন্ন টুলস গুলোতে প্র্যাকটিস করতে পারেন অথবা আপনার নিকটস্থ কোন কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে নিয়মিত অনুশীলন শুরু করতে পারেন।

(৩) কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো ধারনা

আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চান তাহলে শুধু উপরের দুইটি বিষয়ে জ্ঞান রাখলেই চলবে না।আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখতে হবে।কারন আপনি এন্ট্রি করার জন্য যে ডাটা গুলো সংগ্রহ করবেন সেগুলো প্রয়োজনে এডিট,সেভ এবং ডিলিট এবং যে সফটওয়্যারে এই কাজ গুলো করবেন সেই সফটওয়্যার গুলো সম্পর্কে আপনার অবশ্যই ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।

এছারাও অনেক সময় ডাটা গুলো সংগ্রহ করার পরে ডাটা গুলো সরাসরি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ইনপুট দিতে হয় এই কারনে ওয়েবসাইট কিভাবে কাজ করে এবং কিভাবে আপনাকে ডাটা গুলো এন্ট্রি করতে হবে সেই বিষয়েও আপনাকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ টুইটার থেকে অর্থ উপার্জনের ৬ টি সেরা উপায়

ডাটা এন্ট্রির কাজ কত প্রকার?

বিভিন্ন প্রকারের কাজের উপরে নির্ভর করে ডাটা এন্ট্রির কাজকে সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

সেগুলো হল-

  1. এমএস-এক্সেল ডাটা এন্ট্রি
  2. স্পেলিং চেক
  3. পেপার ডকুমেন্টেশন
  4. জব পোস্টিং
  5. অনুবাদ
  6. ডাটা কনভার্সন এবং
  7. ডাটাবেস ক্রিয়েশন

আমরা এখানে ডাটা এন্ট্রির কাজ কত প্রকারের সেই প্রকার গুলোর নাম জানলাম।এখন আমি আপনাদের সংক্ষিপ্ত ধারনা দেওয়ার জন্য উপরের ডাটা এন্ট্রির কাজের ধরন গুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করব যেন আপনারা প্রতিটা ধরন সম্পর্কে একটা বেসিক আইডিয়া পান।

(১) এমএস-এক্সেল ডাটা এন্ট্রি

যখন কোন কোম্পানি তাদের ক্রয়-বিক্রয় রিপোর্ট,গ্রাহকদের রিভিউ এবং ফিডব্যাক অর্থাৎ তাদের বিজনেস রিলেটেড বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে রাখে এবং পরে যখন দরকার হবে তখন এই তথ্য গুলো এডিট,ডিলিট,আপডেট অথবা ব্যাবহার করার উদ্দেশ্যে এমএস-এক্সেল ফাইলে ডাটা সংগ্রহ করে রাখে তখন সেটাকে এমএস-এক্সেল ডাটা এন্ট্রি বলা হয়ে থাকে।

(২) স্পেলিং চেক

নাম শুনেই বুঝতে পারছে যে এই ধরনের কাজ গুলোতে মূলত বানান ঠিক আছে কিনা চেক করে দেখা হয়।হয়ত পূর্বে কোন লেখা যেমনঃ কোন বই,আর্টিকেল,উপন্যাস ইত্যাদি লেখা হয়েছে এখন ফাইনাল মুদ্রনের আগে কাউকে দিয়ে কোন বানান ভুল আছে কিনা সেটা চেক করে নেওয়া হয় এই ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজে।

আরও পড়ুনঃ ছবি বিক্রি করে আয় করার সেরা পাঁচটি ওয়েবসাইট

(৩) পেপার ডকুমেন্টেশন

এই ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজে মূলত আপনাকে কাগজে লেখা তথ্য সরবরাহ করা হবে আপনাকে সেইগুলো কম্পিউটারের বিভন্ন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ডিজিটাল কপি হিসাবে রুপান্তর করতে হবে।যদি সহজ কথায় বলি তাহলে বলা যায় আপনাকে কাগজে থাকা লেখাকে কম্পিউটারে টাইপ করে সংরক্ষন করতে হবে।

(৪) জব পোস্টিং

নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে এখানে যে অপারেটর ডাটা এন্ট্রির কাজ করবে তাঁকে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কিত কাজ করতে হবে।অনেক জব পোর্টাল আছে যেখানে প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে জব পোস্টিং পাবলিশ করতে হয়।তখন তারা ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাকরির খবর গুলো সংগ্রহ করে আর্টিকেল লিখে তাদের জব পোস্টিং ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে থাকে।

(৫) অনুবাদ

অনুবাদ রিলেটেড ডাটা এন্ট্রির কাজে মূলত একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে অডিও অথবা ভিডিও ফাইলের ভয়েচ থেকে কথা সংগ্রহ করে টেক্সট হিসাবে টাইপ করতে হয়।এছারাও অন্য কোন ভাষার বই অথবা আর্টিকেলকে অন্য কোন ভাষায় রূপান্তর করতে হয়।

(৬) ডাটা কনভার্সন

ধরুন আপনাকে আমি ডাটা এন্ট্রির কাজ করানোর জন্য হায়ার করলাম এবং হায়ার করার সময়ে বলে নিলাম যে আমার কাছে কিছু পিডিএফ ফাইলে আছে যেগুলো থেকে তোমাকে দেখে দেখে এমএস-ওয়ার্ড ফাইলে টাইপ করতে হবে।এই ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজকেই মূলত ডাটা কনভার্সন ডাটা এন্ট্রি বলা হয়ে থাকে।অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলা যায় যে যেকোনো ফাইলের ফরম্যাট পরিবর্তন করার জন্য যে ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজ করা হয় তাকেই ডাটা কনভার্সন ডাটা এন্ট্রি বলা হয়।

আরও পড়ুনঃ যে কারনে আপনি ব্লগিং ক্যারিয়ারে ব্যর্থ হচ্ছেন

(৭) ডাটাবেস ক্রিয়েশন

এই ধরনের ডাটা এন্ট্রির কাজে মূলত বিভিন্ন ধরনের সরকারী এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো মাঠ পর্যায় থেকে প্রথমে কাগজে লিপিবদ্ধ করে ডাটা সংগ্রহ করে এবং পরে সেই ডাটা গুলোকে ডিজিটাল ডাটাতে রুপান্তর করে।এই রকম একটি কাজের ভালো উধাহরন হতে পারে আমাদের জাতীয় পত্রের ডাটাবেস তৈরি করা।

আমার শেষ কথা

আপনি যদি ডাটা এন্ট্রির কাজ করে টাকা আয় করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে উপরে আলোচিত যেকোনো এক প্রকারের ডাটা এন্ট্রির কাজে খুব ভালোভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।এরপরে আপনাকে অনলাইনের বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস অথবা অফলাইনে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে আপনাকে আপনার যোগ্যতা অনুসারে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসাবে কাজ শুরু করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *