বর্তমান সময় হল ইন্টারনেট বিপ্লবের যুগ আর এই ইন্টারনেটের একটি উপাদান হল ওয়েবসাইট।কারন বর্তমানে সকল কিছুই ওয়েবসাইট নির্ভর হয়ে গেছে।আপনি একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে কয়েক বছর আগে যেখানে এনআইডি, চাকরির আবেদন জন্ম নিবন্ধন সব কিছু অফলাইন ভিত্তিক ছিল সেখানে বর্তমানে সবকিছু অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছে।আর এই কাজ গুলো কোন কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই করা হচ্ছে।
আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব ওয়েবসাইট কি অর্থাৎ, ওয়েবসাইট কাকে বলে এবং কাদের জন্য ওয়েবসাইট থাকা দরকার এবং কেন ওয়েবসাইট দরকার।আমি আশা করি এই আর্টিকেল শেষে আপনি এই তিনটি বিষয় সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান অর্জন করবেন।তাহলে চলুন অযথা কথা না বাড়িয়ে আজকের এল্কাহ্র মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
ওয়েবসাইট কি?
যখন ইন্টারনেটের সাথে সর্বক্ষণ কানেক্ট থাকা কম্পিউটারে (সার্ভার) থাকা ডাটা গুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবী থাকে আক্সেস করা যাবে তখন তাঁকে ওয়েবসাইট বলা হয়।আমরা যখন আমাদের ডিভাইসে থাকা ইন্টারনেট ব্রাউজারের মাধ্যমে কোন সার্ভারে থাকা ওয়েবসাইট আক্সেস করার চেষ্টা করি তখন আমাদের ব্রাউজার সেই সার্ভার থেকে এইচটিটিপি প্রোটোকলের মাধ্যমে সেই ওয়েবসাইটের সকল ডাটা ডাউনলোড করে আমাদের ব্রাউজারে প্রসেস করার মাধ্যমে আমাদের সামনে প্রদর্শন করে থাকে।
এখন যদি আপনার কম্পিউটার অথবা মোবাইলের ইন্টারনেট ব্রাউজারে আপনি Google.com লিখে ভিসিট করেন তাহলে আপনি গুগলের ওয়েবসাইট দেখতে পারেন আবার যদি আপনি আপনার ব্রাউজারে আমাদের ওয়েবসাইট এর নাম Priyo.TV লিখে সার্চ করেন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট দেখতে পারেন।অর্থাৎ, আপনি ব্রাউজারে যেকোন ডোমেইন নাম লিখে সার্চ করলে যা দেখাতে পারেন সেটাই মূলত ওয়েবসাইট।
কাদের জন্য ওয়েবসাইট থাকা দরকার?কেন দরকার?
বর্তমানে প্রায় সকল কাজেই ওয়েবসাইট ব্যাবহার করা হচ্ছে এবং যাদের ওয়েবসাইট নেই তাদের কাজগুলো যেন তাঁরা ওয়েবসাইট নির্ভর করতে পারে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।আমরা এখন জানব কাদের জন্য ওয়েবসাইট থাকা দরকার এবং কেন দরকার?
কেন ওয়েবসাইট থাকা দরকার?
বর্তমান সময় হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগ আর এই সময়ে আপনার কাজ অথবা বিজনেস শুধু আপনার দেশের মধ্য সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না।সেটাকে পৌঁছে দিতে হবে পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে।আর এটা সম্ভব শুধু মাত্র ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে সেটা যেমন আপনার বাসা থেকে আক্সেস করা যাবে আবার একই ভাবে সেটা ইউএসএ অথবা অন্য যেকোনো লোকেশন থেকে আক্সেস করা যাবে।সুতরাং আপনার নিজের পরিচতি বাড়াতে অথবা আপনার বিজনেসের প্রসার বাড়াতে আপনার একটি ওয়েবসাইট অবশ্যই থাকা দরকার।
কাদের জন্য ওয়েবসাইট থাকা দরকার?
আমরা উপরে জানলাম যে কেন আপনার অথবা আমার একটি ওয়েবসাইট অবশ্যই থাকা দরকার।এখন আমরা জানবো কাদের অবশ্যই ওয়েবসাইট থাকা দরকার।এখানে আমি বিভিন্ন প্রয়োজন অনুসারে যে ওয়েবসাইট গুলো তৈরি করা হয়ে থাকে সেই অনুসারে আলোচনা করব।তাহলে চলুন অতিরিক্ত কথা না বলে মূল আলোচনা শুরু করি।
ব্লগার অথবা লেখকদের জন্য ওয়েবসাইট
আমাদের মাঝে এমন অনেকই আছে যাদের লেখার হাত অনেক ভালো এবং তাঁরা ফেসবুক,কোরা এবং অন্যান্য মাধ্যমে লেখালিখি করে থাকে।কিন্তু অন্য কোন প্লাটফর্মে লিখে সেই লেখকের কি লাভ?কারন সেই প্লাটফর্ম গুলো আপনার লেখা কন্টেন্ট দিয়ে আয় করলেও আপনাকে এর থেকে প্রফিট দিবেনা।আবার যেকোনো সময় তারা যেকোনো পলিসির কারনে আপনার লেখা ডিলিট করে দিতে পারে এমনকি আপনার অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত ডিলিট করে দিতে পারে।
এরফলে আপনি যে এতদিন কষ্ট করে লেখা গুলো লিখলেন সেগুলো নাই হয়ে যেতে পারে এবং আপনার সব কষ্ট বিফলে যেতে পারে।
![Writer Writing A Story.jpg](https://itsbd.tv/wp-content/uploads/2023/06/Writer-Writing-A-Story.jpg)
এই সমস্যার সহজ সমাধান হল আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকা।আপনার নিজের ওয়েবসাইট থাকলে লেখা গুলো কখনো হারানোর ভয় থাকবে না আবার আপনি চাইলেই আপনার লেখা গুলো থেকে আপনার ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স অথবা অন্য কোন বিজ্ঞাপন ব্যাবহার করে টাকা আয় করতে পারবেন।
পোর্টফলিও ওয়েবসাইট
আপনি যখন প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন করবেন তখনও আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যাবহার করতে পারবেন।গবেষণা বলছে যে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান গুলো সিভি দেখার জন্য ৩ সেকেন্ড থেকে ২৬ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে থাকে।এই সময়ের মধ্য তারা সিভিতে অন্যদের চাইতে চাল কিছু দেখতে পারলে তাঁকে পরের স্টেপের জন্য সিলেক্ট করে।এখন সবাই যেহেতু তাদের চাকরির সিভিতে পোর্টফলিও হিসাবে ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যাবহার করে না সেকারনে আপনি যদি ব্যাবহার করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সিভিটি অন্যদের চাইতে তাদের কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
![Portfolio Website.jpg](https://itsbd.tv/wp-content/uploads/2023/06/Portfolio-Website.jpg)
আপনি যদি চাকরির সিভিতে আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যাবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই সেই ওয়েবসাইটটি আপনাকে ভালো ভাবে আপনার সকল তথ্য দিয়ে সাজিয়ে নিতে হবে এবং এর পরেই সিভিতে ব্যাবহার করতে হবে।
বিজনেস ওয়েবসাইটে (ব্যাবসার জন্য)
আমি সব সময় বলে থাকি যে ইন্টারনেটের এই যুগে আমাদের ব্যবসাকে শুধু দেশের মধ্য সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা।ব্যাবসার প্রসার ঘটাতে হবে সারা পৃথিবী ব্যাপী।আর সারা পৃথিবী ব্যাপী আপনার ব্যবসাকে পরিচিত করার একমাত্র উপায় হল ওয়েবসাইট।আপনি যদি আপনার ব্যবসা রিলেটেড একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আপনার ব্যবসার ধরন,আপনি কি কি প্রোডাক্ট তৈরি করেন,কিভাবে আপনি সারা পৃথিবী ব্যাপী আপনার প্রোডাক্ট/সেবা পৌঁছে দিবেন এবং কেউ যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করতে চায় তাহলে সে কিভাবে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এই তথ্য গুলো দিয়ে যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে আপনার বিজনেস এই দেশে হলেও দেখবেন ঠিকই যারা আপনার প্রোডাক্ট কিনতে চান তারা হয়ত ইউএস,কানাডা,ইউরোপ অথবা অন্য যেকোনো এলাকা থেকে আপনার সাথে যোগাযোগ করেছে।
![Business Website.jpg](https://itsbd.tv/wp-content/uploads/2023/06/Business-Website.jpg)
এখন ভেবে দেখেনত ওয়েবসাইট ছাড়া কি এই ধরনের যোগাযোগ সম্ভব ছিল?অবশ্যই সম্ভব নয় কারন তারা জানেই না যে বাংলাদেশে এমন একটি প্রতিষ্ঠান আছে যারা তাদের চাহিদা অনুসারে প্রোডাক্ট তৈরি এবং সাপ্লাই করতে পারবে।অতএব আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে আমাদের ব্যবসার প্রসার ঘটানোর জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে।
শেষ কথা
ইন্টারনেট সহজলভ্যতার কারনে বর্তমানে ওয়েবসাইট আমাদের জীবনের প্রতিটা কাজের সাথে জরিয়ে গেছে।আমাদের প্রতিদিনের অনেক কাজই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে হয়।এছারাও গ্লোবাল মার্কেটে অন্যদের সাথে টিকে থাকার জন্য হলেও আমাদের সকলেরই ব্যাক্তিগত অথবা বিজনেস ওয়েবসাইট অবশ্যই তৈরি করতে হবে।