বর্তমানে যেকোনো চাকরির জন্য এত পরিমাণ প্রতিযোগিতা যে ভালোভাবে প্রস্তুতি না নিলে চাকরি পাওয়াই যাবেনা।কারন কেউ যদি আপনার চাইতে বেশী যোগ্য হয় তাহলে অবশ্যই কোন প্রতিষ্ঠান তাঁকে রেখে আপনাকে তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিবে না।আর এই কারনেই আপনি যদি পড়াশোনা শেষে সরকারী চাকরি অথবা বেসরকারি চাকরি করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে অনেক আগে থেকেই চাকরির প্রস্তুতি হিসাবে পড়াশোনা শুরু করতে হবে।
কিন্তু আমার আশেপাশেই আমি এমন অনেক জনকে দেখেছি যাদের মধ্য চাকরির পরীক্ষ,চাকরির পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি এবং চাকরি সম্পর্কে এমন কিছু ভুল ধারনা আছে যা তাদের চাকরি পাবার ক্ষেত্রে প্রধান বাঁধা বলা যেতে পারে।
আমি আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে সেই ভুল সিদ্ধান্ত এবং ধারনা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।আশা করি এই লেখা পড়ার পরে আপনাদের সেই ভুল সিদ্ধান্ত গুলো সংশোধন করে নিতে পারবেন।
চাকরির পরীক্ষ,চাকরির পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি এবং চাকরি সম্পর্কে ভুল ধারনা গুলো হল
আমাদের সকলের মনের মধ্য চাকরির পরীক্ষ,চাকরির পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি এবং চাকরি সম্পর্কে যে ভুল ধারনা গুলো কাজ করে এবং যে ধারনা গুলোর জন্য আমরা ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহন করি সেগুলো হলঃ
- অনার্সে ভর্তির পর চাকরির পড়াশোনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া
- অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার চিন্তা করা
- নিজের বই গুলো না পড়া
- সব সময় শর্ট সাজেশনের চিন্তা করা এবং
- পরিকল্পনা নিতে না পারা
এখানে আমরা পাঁচটি এমন বিষয়ের সম্পর্কে জানলাম যেগুলো আমাদের সকলেরই কমন সমস্যা।আমরা এই বিষয় গুলো নিয়ে কি কি ধারনা মনে মনে করি সেই বিষয়ে আমি এখন আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করব।
(১) অনার্সে ভর্তির পর চাকরির পড়াশোনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া
অন্য কারও কথা কি বলব আমি নিজেই যখন ইন্টার পাশ করলাম তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে যাক এবার অনার্সে ভর্তি হয়ে নিয়েই চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করতে হবে।এরপরে আমার অনার্স ভর্তি হয়ে গেল আবার অনার্স কমপ্লিটও হয়ে গেল আমার চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পড়াশোনা আর শুরু করা হলনা।
আমি মনে করি এই সমস্যা শুধু আমার না।আমাদের দেশের ৯০ ভাগ ছেলে-মেয়েরা এই সমস্যার মধ্য দিয়েই জীবন পার করে এবং অনার্স শেষে যখন দেখে আর কোন উপায় নেই তখন চাকরির জন্য পড়াশোনা করতে যেয়ে অনেক বেশী চাপের মধ্য পরে যায়।
এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য আপনার যখন ইন্টার পরীক্ষা শেষ হবে তখন থেকেই চাকরির পড়াশোনা শুরু করতে হবে।আর যদি আপনাকে অনার্সে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হতে হয় তাহলে প্রথমে আপনাকে অনার্সে ভর্তি হবার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে এবং অনার্সে ভর্তি হয়েই চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করে দিতে হবে।
(২) অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার চিন্তা করা
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা মনে করেন যে বর্তমানে যেকোনো চাকরি ঘুষ দিলেই পাওয়া যায়।আমি তাদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন করতে চাই।আপনি কি মনে করেন এই দেশে যত চাকরির নিয়োগ হয় সব গুলো চাকরি এই ধরনের অনৈতিক সুবুধার মাধ্যমেই হয়?এর সোজাসাপটা উত্তর হল না সব চাকরি ঘুষ অথবা অন্য কোন অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে হয়না।আপনার যদি পর্যাপ্ত মেধা থাকে তাহলে আপনি মন প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করলেই দেখবেন কোন ধরনের অনৈতিক সুবিধা ছাড়াই ভালো কোন চাকরি পেয়ে গেছেন।সুতরাং, আজকে থেকে আপনার মনের মধ্য থাকা এই ধারনা মুছে ফেলে ভালোভাবে পড়াশোনা শুরু করে দিন।
(৩) নিজের বই গুলো না পড়া
এমন অনেকই আছে যদি তাদেরকে কেউ বলে তার কাছে একটা চাকরির পড়াশোনা বিষয়ক নোট আছে তাহলে দেখবেন তারা সব কিছু বাদ দিয়ে তাদের পিছে পিছে ঘোরা শুরু করে দেয়। এবং এভাবেই মাসের পর মাস বছরের পর বছর সময় নষ্ট করে ফেলে।অথচ তার কাছেই অনেক বই অথবা নোট পড়ে আছে যেগুলো সে খুলে দেখার সময় পায় না।
আপনার যদি এই অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে আজকে থেকে অন্যদের পিছনে নোটের জন্য না ঘুরে আপনার নিজের কাছে যে বই গুলো আছে সেই গুলো আগে শেষ করে তারপরে অন্য কারও কাছে নোটের জন্য ধর্না দেন।
(৪) সব সময় শর্ট সাজেশনের চিন্তা করা
ছাত্র জীবনে আমার কিছু বন্ধু ছিল যারা কিনা সারা বছর পড়াশোনার কোন নাম নিত না।তবে তারাই আবার পরীক্ষার আগে বলত বন্ধু তোর কাছে কোন শর্ট সাজেশন হবে নাকি?
আপনার কি আমার সেই বন্ধুদের মত অভ্যাস আছে নাকি?সব সময় শর্ট সাজেশন খুঁজে বেড়ানো?এই দুইটি প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে আমি আপনাকে বলব ভাই আপনি শুধু শুধু চাকরির পরীক্ষা দিয়ে আপনার সময় আর টাকা নষ্ট করবেন না।কারন যেকোনো চাকরির পরিক্ষাতে কি ধরনের প্রশ্ন করা হবে সেটা কারও পক্ষে বলা একেবারেই অসম্ভব।সুতরাং এসব শর্ট সাজেশনের ধান্দায় কারও পিছেনে ঘুরে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ান।
(৫) পরিকল্পনা নিতে না পারা
আমাদের মাজেহ অনেকেই আছে যে কোন চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিবে সেই সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা আবার সেই অনুসারে পরিকল্পনাও নিতে পারে না।তারা একই সাথে শিক্ষক নিয়োগ, বিসিএস,ব্যাংকের নিয়োগ সহ আরও যা যা আছে সকল চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করে।এবং ফলাফল যা হবার সেটাই হয় যে তারা সব গুলো চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করার ফলে কোন পড়াশোনাই ঠিক মত করতে পারেনা এবং এর কারনে কোন চাকরির পরীক্ষায় তারা ভালো করতে পারেনা।
এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে প্রথমে ঠিক করতে হবে যে আপনি ঠিক কোন ধরনের চাকরির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে চান।চাকরির ধরন পছন্দ করা হয়ে গেলে সেই অনুসারে পড়াশোনা করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে এবং সেই অনুসারে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
আমার শেষ কথা
আমি আজকের পোস্টে যে পাঁচটি বিষয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম যদি আপনি এই বিষয় গুলো নিয়ে এতদিন পোস্টে যেভাবে আমি বললাম সেভাবে আপনি চলে থাকেন তাহলে আপনার উচিত হবে আজকেই এই ধারনা এবং সিদ্ধান্ত গুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিয়ে পূর্ণদমে চাকরির প্রস্তুতির জন্য পড়াশোনা শুরু করে দেয়া।