জনাব তারেক রহমান ( Tarique Rahman),
এর আগে আপনাকে একটা খোলা চিঠি লিখেছিলাম। সেই চিঠির উত্তর আপনি সরাসরি না দিলেও আপনার প্রতিনিধি আমাকে সরাসরি ফোন করে জানিয়েছেন- ব্যপারটা আমলে নেয়া হয়েছে।
আমার ঠিক জানা নেই, দেশ জুড়ে কাগজের তৈরী আপনার যে সব ছবি টানানো হয়েছিলো, সেগুলো তুলে ফেলা হয়েছে কিনা। কিন্তু আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের লেখা এবং সমালোচনা আপনি আমলে নিয়েছেন, এটা অন্তত মন্দের ভালো।
কেন মন্দের ভালো বলছি জানেন? এর আগে তিন তিনটা খোলা চিঠি লিখেছিলাম Chief Adviser GOB কে। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই চিঠি লিখতে বলেছিলেন। মন খুলে সমালোচনা করতে বলেছিলেন। অথচ সাধারণ মানুষের কোন প্রতিনিধিদের তিনি আদৌ আমলে নিচ্ছেন কিনা আমার সন্দেহ আছে।
আমরা নিজেদের জীবনের মায়া না করে, বন্দুকের নলের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলাম। সেই আমাদের আন্দোলনের ফলে যে সরকার এসেছে। সেই সরকারকে অন্তত আমার আর নিজের বা নিজেদের সরকার মনে হচ্ছে না। কারন এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টারা কি করছে জানেন?
শ্রেফ যে বা যাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিংবা অমুক দল পন্থী, তমুক দল পন্থী। এদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। সংলাপ করছে। বিভিন্ন জায়গায় পদ-পদবী দিয়ে বসাচ্ছে।
আমি দেশে এসেছি সপ্তাহ দুয়েক হয়। নিজের লেখালেখির জন্যই ঘুরে-বেড়াচ্ছি। আজ একটা স্থানে আমাদের গাড়ি আটকানো হয়েছিলো। সেখানে সকল গাড়িকেই চাঁদা দিতে হয়। আমাদের ড্রাইভারকেও দিতে হয়েছে।
ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম
– কারা এরা?
ড্রাইভার হেসে বললেন
– আর বইলেন না। আগে এক দলের লোক করতো, এখন আরেক দলের লোক করছে।
সাধারণ ভাবে এই চাঁদাবাজীর দায় সরকারকেই দেয়া উচিত। কিন্তু আমার মনে হয় না এই সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কোন কিছুর দায় নিচ্ছে। এরা আসলে জবাদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে গেছে।
এই সরকারই আসলে চাঁদাবাজি করতে দিচ্ছে। নইলে তো জায়গায়া জায়গায় চাঁদাবাজি চলতে পারতো না। তাই উপায় অন্তর না দেখে আপনাকে এই খোলা চিঠি লিখছি।
দয়া করে আপনার দলের প্রতিটি ইউনিটকে বলুন- চাঁদাবাজি বন্ধ করতে। মানুষ কিন্তু এর মাঝেই অতিষ্ঠ হতে শুরু করেছে।
আমার মনে আছে মাস খানেক আগে আপনার উপদেষ্টা Mahdi Amin ভাইকে মেসেজ করে লিখেছিলাম- “আপনাকে দেখে তো আমার হিংসা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের কোন রাজনীতিবিদ যে এত চমৎকার করে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারে। সেটাও খুব সাধারণ ভাবে। গতানুগতিক রাজনীতিবিদরা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবে না।”
আমার পরিষ্কার মনে আছে, এরপর আমি আপনার উপদেষ্টাকে লিখেছিলাম – “জীবনে কখনো রাজনীতি করার ইচ্ছা হয় নাই। এখন আপনাকে দেখে হচ্ছে!” এটি আমি বলার জন্যই লিখেছিলাম। রাজনীতি করার কোন ইচ্ছা আমার নেই।
তিনি কি উত্তর দিয়েছেন, সেটা আর না বলি এই লেখায়। এমনিতেই লেখাটা বড় হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারকে দিয়ে যে কিছু হবে না। সেটা মনে হয় একজন শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মধ্যেবিত্ত সবাই বুঝে গেছে। কারন এই সরকার এলিটদের সরকার। এরা আমাদের প্রতিনিধি না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে – পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারকে দিয়ে কী কিছু হবে?
উত্তরটা হচ্ছে – আমরা সাধারণ মানুষরা শংকিত। তেমন কোন আশাও দেখতে পাচ্ছি না। এ কারনে আপনাকে এই খোলা চিঠি লিখছি। আপনার দলও কী এই সরকারের মত এলিটদের সরকার হবে?
এই দেশটা কি কখনো সাধারণ মানুষের হবে না? শুনেছি – আপনার দল ভবিষ্যতের সরকার গঠন করতে পারে। আপনার দলও কী তবে এলিটদেরই হবে?
হলে হোক। অন্তত চাঁদাবাজি, লুটপাট, মারামারি এসব বন্ধ করুন। আমরা বাংলাদেশিরা কখনো বেশি কিছু চাই না। পরিবার নিয়ে দুই বেলা খেয়ে শান্তিতে যাতে ঘুমাতে পারি।
আপনারা বেগম পাড়া বানান, যা ইচ্ছা করুন। এসব আমরা আমাদের ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছি। দেখতেই তো পাচ্ছেন- নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাওয়া প্রধান উপদেষ্টা পর্যন্ত আমাদের হতে পারেন নাই।
তাই আপনার কাছে অনুরোধ – আমাদের অন্তত শান্তিতে থাকতে দিন। আমরা কেবল রক্তই দিয়ে গেলাম। দেশটা আমাদের হলো না।
সংগ্রহ: আমিনুল ইসলামের ফেসবুক পোস্ট থেকে