সর্বশেষ সংবাদ

ড. ইউনূসসহ ২০ উপদেষ্টার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ট্রাম্পের, যা জানা গেলো

সম্প্রতি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ও টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ছাড়াও উপদেষ্টাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে বলেও ওই ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে।

তবে ড. ইউনূসসহ উপদেষ্টাদের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেননি। বরং, ভিন্ন কয়েকটি ফুটেজ ব্যবহার করে সম্পাদিত ভিডিও মাধ্যমে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

প্রচারিত ওই ভিডিওটির কিছু অংশের রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সাংবাদিক মাসুদ কামালের ইউটিউব চ্যানেল ‘কথা’য় একটি ভিডিও খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। ওই ভিডিওতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসবে কিনা এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করা হয়। আলোচিত এই ভিডিওর সঙ্গে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু অংশের মিল রয়েছে। মূলত, এই ভিডিওর কয়েকটি অংশ সম্পাদনার মাধ্যমে ইন্টারনেটে ভুয়া নিষেধাজ্ঞার দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে সাংবাদিক মাসুদ কামালের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র কেমন পদক্ষেপ নিতে পারে এবং এ বিষয়ে ভারতের দেশি ও মার্কিন প্রবাসী নাগরিকদের নানা কার্যকলাপ নিয়ে ভিডিওটিতে আলোচনা করা হয়েছে। তবে ওই ভিডিও অন্তর্বর্তী সরকার, ড. ইউনূস কিংবা উপদেষ্টাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি।

এছাড়াও ভিডিওতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির অনলাইন সংস্করণে গত ১৬ নভেম্বরের একটি প্রতিবেদন আংশিক পাঠ করা হয়। যেখানে আমেরিকা প্রবাসী ভারতীয়দের বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। তবে সেখানেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটিতে ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি এক্স বার্তার (সাবেক টুইটার) উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই পোস্টটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়নি। এটি মূলত ট্রাম্পের নাম ব্যবহার করে পরিচালিত একটি ফ্যান অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়েছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও এক্স অ্যাকাউন্ট যাচাই করেও নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার দাবির পক্ষে কোনো পোস্ট বা তথ্য পাওয়া যায়নি।

এছাড়া ড. ইউনূস ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেয়ার আগে তার কোনোপ্রকার নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার দাবিটিও যৌক্তিক নয়। সুতরাং, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও উপদেষ্টাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার দাবিটি মিথ্যা ও বানোয়াট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *