সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আয়নাঘর! চোখ কপালে উঠার মত ঘটনা!

আমি তালহা মোহাম্মাদ। ২০১৩ সালের ব্রাভো ব্যাচে অফিসার ক্যাডেট হিসাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদান করি।২০১৫ সালের জুন মাসে সফলভাবে ট্রেনিং সম্পন্ন করে ইঙ্গিনিয়ারিং ব্রাঞ্চে এক্টিং সাব ল্যাফটেনেন্ট হিসাবে কমিশন লাভ করি। সেই সুবাদে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে আমাকে ন্যাভাল আর্কিটেকচার এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন করার উদ্দেশ্যে এম,আই,এস,টি (মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি) তে পাঠানো হয়।

অধ্যয়নকালীন অবস্থায় ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর, নৌবাহিনীর হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি যার প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন নৌ প্রধান এডমিরাল মোহাম্মাদ নিজামুদ্দিন আহমেদ স্যার। অনুষ্ঠানে তৎকালীন ডি,এন,আই (ডিরেক্টর অব ন্যাভাল ইন্টেলিজেন্স) কমোডোর সোহাইল স্যারের সাথে আমার দেখা হয়। উনি আমাকে এম,আই,এস,টি’র কিছু ফিমেইল অফিসার এবং মেইল অফিসারের গতিবিধি সম্পর্কে প্রতি শুক্রবারে তাকে সরাসরি কল করে রিপোর্ট করতে বলেন।

যেহেতু আমি এফ,আই,এস (ফিল্ড ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস ) অথবা অন্য কোন ইন্টেলিজেন্স এর সদস্য ছিলাম না এই বিষয়টিকে আমার অনৈতিক মনে হয় যা থেকে নৈতিক দ্বিধার জন্ম নেয়। পরবর্তী শুক্রবারে উনাকে কল করে আমি এই বিষয়টি জানাই।
এই ঘটনার প্রায় ৩ মাস পর, ২০১৭ সালের ৯ মার্চ সাদা পোশাকধারী দুইজন (কমান্ডার এবং ল্যাঃকমান্ডার) এফ,আই,এস এর সদস্য, ন্যাভাল আর্কিটেকচার এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট হেড ক্যাপ্টেন মুনির স্যারের কক্ষে আমাকে ডেকে পাঠান।কমান্ডার র‍্যাংকের অফিসার নিজেকে এফ,আই,এস ঢাকার 2IC (Second in charge) হিসাবে পরিচয় দেন।

আমাকে বলা হয় একটা ইনভেস্টিগেশনের কাজে আমার সহায়তা লাগবে বিধায় তাদের সাথে যেতে হবে।কোথায় যেতে হবে তা আমাকে বলা হয়নি। আমাকে আমার ল্যাপটপ এবং ২ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপর সাথে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।পরবর্তীতে আমাকে একটি সাদা মাইক্রবাসে উঠানো হয়।

গাড়ির দরজা বন্ধ হবার সাথে সাথে আমার ফোন, ল্যাপটপ নিয়ে নেয়া হয় এবং হাত পিছমোড়া করে হাত কড়া পরিয়ে চোখে কাল কাপড় বেঁধে তার উপর একটি ব্যাগ জাতীয় কিছু পরানো হয় । ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতবিহ্বল হয়ে পরি এবং কোন কিছু বলার বা প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও হারিয়ে ফেলি। আনুমানিক ৩০ মিনিট পরে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে আমার হাত এবং চোখ খুলে দিয়ে আমার ফোন আমার হাতে দেয়া হয়।

কক্ষটি আমার কাছে বি,এন,এস হাজি মহসিনের একটি কক্ষ বলে মনে হয়। অতঃপর আমার মা- কে কল দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাস্ত থাকায় পরবর্তী কিছুদিন যোগাযোগ করতে পারব না বলতে বলা হয়।কথা বলা শেষ হলে আগের ন্যায় আবার হাতকড়া , চোখে কাল কাপড় এবং তার উপর একটি ব্যাগ জাতীয় কিছু পরিয়ে পুনরায় গাড়িতে তোলা হয়।আমার মনে হচ্ছিল আমি আমার মায়ের কাছ থেকে শেষবারের মত বিদায় নিয়ে নিলাম এবং হয়ত আর ফিরে আসতে পারব না।

আনুমানিক ঘণ্টাখানিক চলার পর গাড়িটি থামে। হাতকড়া পরানো এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে সিঁড়ি বেয়ে একটা ভবনের দুইতালাতে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার দুইহাত দুপাশ থেকে দুইজন ধরে রেখেছিলো। দুতলায় উঠে হাতকরা খুলে আমাকে একটা মেটালের চেয়ারে বসান হয়। হাত, পা এবং মাথা চেয়ারের সাথে আটকে দেয়া হয়।

সম্প্রতিকালের আয়নাঘরের বর্ণনা শুনে আমার মনে হয় আমাকে সে রকম কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চেয়ারে ওভাবেই বসেছিলাম অনেকক্ষণ। চারপাশে কিছু বড় বড় এক্সস্ট ফ্যানের আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই কানে আসছিল না। আনুমানিক দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর দুইজন এসে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। আমার মনে হচ্ছিল একজনের হাতে একটা ব্যাটন জাতীয় কিছু আছে যা দিয়ে মাঝে মাঝেই আমাকে বিভিন্ন যায়গায় স্পর্শ করা হচ্ছিল এবং মাটিতে আঘাত করে ঠক ঠক শব্দ করা হচ্ছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে আমাকে নিম্নরূপ প্রশ্ন করা হয়ঃ

১। উলফা নামক জ ঙ্গি সংগঠনের সাথে আমার যোগাযোগ আছে কি না।
২। বাংলাদেশে কোথায় অবৈধ অস্ত্র বানান হয় এবং অস্ত্র চোরাচালানের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা।
৩। বাংলাদেশে কোন কোন যায়গা দিয়ে মাদক দ্রব্য প্রবেশ করে এবং মাদক চোরাচালানের সাথে কোন সম্পৃক্ততা আছে কি না।
৪। MIST’র ৩ বাহিনীর ফিমেল অফিসারদের সাথে বাইরের কারো অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আমার সম্পৃক্ততা আছে কিনা।

এভাবে জিজ্ঞাসাবাদকারিরা বেশ কিছুক্ষণ প্রশ্ন করে চলে যাচ্ছিল এবং কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এসে প্রশ্ন করছিল। তারা আমাকে বার বার বলছিল যে তাদের কাছে এইসব ব্যাপারে আমার সম্পৃক্ততার প্রমাণ আছে এবং আমি যেন স্বীকার করে ফেলি। পুরোটা সময় আমি চেয়ারের সাথে বাঁধা ছিলাম এবং চোখ কাল কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।

আমার হাত পা ব্যাথা হয়ে গেলে তাদেরকে অনেক অনুনয় বিনয় করি খুলে দেয়ার জন্য কিন্তু তারা আমার কথায় কর্ণপাত করেনি। শুধু দুই,তিন বার আমার ঠোঁটে গ্লাস ঠেকিয়ে দিয়ে পানি খেতে দিয়েছিল।

টানা প্রায় দুইদিন আমাকে চেয়ারের সাথে হাত পা বাঁধা অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদ করা শেষে বি,এন,এস হাজি মহসিন অফিসার্স মেসের উপর তালায় একটি কক্ষ্যে নিয়ে এসে হাত করা এবং চোখের কাপড় খোলে দেয়া হয় এবং বাইরে থেকে দরজা তালা দিয়ে দেয়া হয়। প্রচণ্ড ক্লান্তি, খিদা আর হতবিহ্বলতায় আমি ঘুমিয়ে পরি।

ওইদিন বিকেলে আমাকে ঘুম থেকে তোলে বলা হয় যে কমোডর সোহাইল স্যার আমার সাথে দেখা করতে এসেছেন। আমাকে আটক করে রাখা রুমের সামনে বসার জায়গা করা হয়। উনি এসে আমাকে বলেন আমার ব্যাপারে নেভাল হেডকোয়ার্টার্স থেকে ইনভেস্টিগেশনের আদেশ দেয়া হয়েছে।

তার পরের দিন আমাকে ইউনিফর্ম পড়তে নির্দেশ দেয়া হয় ইউনিফর্ম পরা শেষে আমাকে একটি জিপে তোলা হয়। আমার দুই পাশে দুইজন অফিসার বসে ছিলেন। আমি যে জিপে ছিলাম তার সামনে একটি আর্মড সেইলরদের গাড়ি ছিল এবং আমাদের গাড়ির পিছনে ছিল আরেকটি গাড়ি। ঘটনাগুলো এত দ্রুততার সাথে ঘটছিল যে আমার মনে হচ্ছিল আমি আমার বোধশক্তি হারিয়ে ফেলছি। আমার সাথে কেন এমন করা হচ্ছে, আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে অথবা আমি আদৌ বেঁচে থাকব কি না তার কোনটা নিয়েই আমার কিছু বোধগম্য হচ্ছিলনা।

জিপ যোগে আমাকে বিমানবন্দর রেলস্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে ট্রেনের একটি রিজার্ভড বগিতে করে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে আবার জিপ যোগে বি,এন,এস ঈসা খানে নিয়ে যাওয়া হয়।

ছোট্ট একটি কক্ষে আমাকে আটকে রাখা হয় যেখানে একটি বিছানা ছাড়া কোন আসবাবপত্র ছিল না এমনকি বিছানায় কোন তোশক, চাদর বা বালিশের কোন কাভারও ছিল না।আমাকে খাবার এবং পানি দেয়া হত জানালা দিয়ে। তোশক বিহীন নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে বানান জাজিমে শুয়ে থাকতে থাকতে কালশিরা পরার উপক্রম হত। শু এই সময়ে আমাকে খাবার দেয়া এবং অন্যান্য বিষয় দেখভাল করার দায়িত্বে নিয়জিত দুইজন অফিসারকে আমার সাথে কি হচ্ছে বা হবে এই ব্যাপারে বার বার জিজ্ঞেস করলেও আমাকে পুরোটা সময়ই অন্ধকারে রাখা হয়।

তার কিছুদিন পরে কয়েকজন অফিসার আমাকে পাশের একটি রুমে নিয়ে সেই আগের বিষয়গুলো পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বার বার এসব কিছুর ব্যাপারে আমার কোন সম্পৃক্ততা নাই বললেও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এক পর্যায়ে মানসিক ভাবে প্রচণ্ড কাহিল হয়ে কান্না করে তাদেরকে বলি যে আমাকে যেকোন ধরনের শাস্তি দিতে তারপরেও যেন এই মানসিক অত্যাচার থেকে আমাকে মুক্তি দেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের শেষের দিন একজন ক্যাপ্টেন স্যার আমাকে বলেন যে আমার ভয় পাবার কোন কারন নাই কারন আমার সাথে কোন কিছুর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি। আমাকে এম,আই,এস,টি তে আবার ফেরত পাঠান হবে এবং আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারব।

কিন্তু এভাবে কমান্ড মেসে ছোট্ট একটি রুমে বন্দী অবস্থায় কেটে যেতে লাগলো দিনের পর দিন। কিছুদিন পরে আমাকে বলা হয় মানসিক প্রস্তুতি নিতে কারন রোজার ঈদের আগেই ছেড়ে দেয়া হবে আমাকে। রোজার ঈদ চলে গেলো ছাড়া পাবার কোন আলামত দেখলাম না। বরং রোজার ঈদের পরে হঠাত একদিন বলা হল আমার সাথে কালো যাদু করার সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছে। এই ব্যাপারে আমাকে তৎকালীন বি,এন,এস ঈসা খানের সি,ই,ও কমোডোর মুসা স্যারের অফিসে নিয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা জিগ্যাসাবাদ করা হয়। এরকম একটি ঘটনার পর আমি মানসিক ভাবে আরও ভেঙ্গে পরি। তার কিছুদিন পরে বলা হল কোরবানির ঈদের আগে ছেড়ে দেয়া হবে কিন্তু কোরবানির ঈদও কাটল বন্দী অবস্থায়।

এভাবে দেখতে দেখতে কেটে যায় ১৮৩ দিন (৬ মাস)। পুরোটা সময় আমার পরিবার খোঁজ করতে চাইলে তাদেরকে কমোডোর সোহাইল জানান যে আমার সাথে অস্ত্র এবং মাদক চোরাচালানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গিয়েছে যার দরুন আমাকে আটক করে রাখা হয়েছে। কিছুদিন আগেই বাবা হারানো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটা ছিল অনেক বড় আঘাত।

২০১৭ তারিখের ২৩ আগস্ট আমাকে জানানো হয় আমাকে ঐদিন রাতে আমাকে ঢাকা ফেরত পাঠানো হবে এবং পরদিন হতে আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারব। ওইদিন রাতে একজন অফিসার আমাকে ট্রেন যোগে ঢাকাস্থ বি,এন,এস হাজি মহসিনে নিয়ে আসেন। আনুমানিক সকাল ৯ টায় আমাকে বি,এন,এস হাজি মহসিনের সি,ও ক্যাপ্টেন আরিফ আহমেদ মোস্তফা স্যারের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আমি বি,এন,এস হাজি মহসিনের সকল অফিসারদের দেখতে পাই।

সেখানে কোনরকম পূর্বাভাস ছাড়াই আমাকে ডিসমিসাল লেটার পড়ে শোনানো হয় এবং আমার র‍্যাঙ্ক খুলে নেয়া হয়। আমার মনে হচ্ছিল পুরা পৃথিবীটা আমার সামনে ছোট হয়ে আসছে এবং কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তারপর আমাকে ১০ মিনিট দেয়া হয় সি,ও স্যারের অফিসের ওয়াশ রুমে গিয়ে ইউনিফর্ম পালটে সিভিল পোশাক পরার জন্য ।

ইউনিফর্ম পরিবর্তন করা শেষে আমাকে একটা জিন ফর্ম দেয়া হয় এবং আমার ফোন ও ল্যাপটপ ফিরিয়ে দেয়া হয় তারপর আমাকে একটা খামে আগস্ট মাসের আমার বেতনের হিসাব(যার কোনকিছুই আমার বোধগম্য হচ্ছিল না তখন) এবং একটি খামে প্রায় সাত হাজার টাকা ধরিয়ে জিপ যোগে জাহাঙ্গীর গেটে নামিয়ে দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে আমাকে জিন ফর্ম ব্যাতিত কোন ধরনের নথিপত্র দেয়া হয়নি।

চাকরি হারানর কিছুদিন পরে আমি এম, আই, এস টি যাই তে একজন সিভিলিয়ান ছাত্র হিসাবে পড়ালেখা চালিয়ে যাবার কোন সুযোগ দেয়া হবে কিনা জানতে। আমাকে জানিয়ে দেয়া হয় এটা সম্ভব না এমনকি আমাকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করার সুযোগ দিতেও অপারগতা প্রকাশ করা হয়।

যেহেতু আমি ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রাঞ্চের অফিসার ছিলাম কমিশনের পরে আমি বাংলা পরীক্ষা দিতে পারিনি। যার কারনে বি,ইউ,পি প্রদত্ত ডিগ্রীও আমার ছিল না। আমি বি,ইউ,পি তে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করলে আমাকে সহায়তা করতে অপারগতা জানান হয়। এমনকি নেভাল হেডকোয়ার্টার্সে আমার এস,এস,সি এবং এইচ,এস,সি সার্টিফিকেট তুলতে গেলে গার্ড রুমে আটকে দেয়া হয় এবং ঢুকতে দেয়া হয়নি। তার প্রায় ২ বছর পরে আমি সার্টিফিকেট গুলা তুলতে সক্ষম হই।

তার প্রায় ২ মাস পরে আমার ফোনে একটা কল আসে। কল রিসিভ করার পর আমি কমোডোর সোহাইল স্যারের গলার আওয়াজ শুনতে পাই। স্যার আমাকে নেভাল হেডকোয়ার্টার্সে অবস্থিত তার অফিসে দেখা করতে বলেন। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় আমি আবার হতবিহ্বল হয়ে পরি। কিন্তু ততদিনে উনার প্রতি আমার ভিতর এতটাই ভয় জন্মেছিল যে আমি না গিয়ে পারিনি।

এইবার আমাকে আর গার্ডরুমে আটকানো হল না।তিন চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে আমি স্যারের রুমে গেলাম। উনি আমাকে বসতে বলে চা খেতে দিলেন এবং কি করছি না করছি এবং কি করার চিন্তা করছি সে বিষয়ে জানতে চাইলেন। কি বলব আমি বুঝতে পারছিলাম না। বিদায় নেবার পূর্বমুহূর্তে স্যার আমাকে বললেন “Talha you should have called me when I asked you to do so.” এই কথা এবং কথাটি বলার সময় উনার অভিব্যক্তি আমাকে আজও তাড়া করে বেরায়।

আমার জীবনের ঘটে যাওয়া এই ঘটনা আজ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাবে আমাকে মানসিক ভাবে বিপন্ন করে। এখন পর্যন্ত আমি এর রেশ কাটিয়ে ঠিক মত নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারিনি।

আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই এবং আমার মত আরও যেসব অফিসার বিভিন্ন বৈষম্যের এবং অবিচারের শিকার হয়েছেন আমি চাই সবাই যেন সুষ্ঠু বিচার পান।

তালহা মোহাম্মাদ।
এক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট (বরখাস্থ)
পি নংঃ ২৭৭৬
চিবা (শিন মাতসুদো সিটি),জাপান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *