ওপেন এআই চ্যাট জিপিটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

বর্তমানে টেক দুনিয়ার সব চাইতে বড় আলোচনার বিষয় হল ওপেন এআই এর চ্যাট জিপিটি।কারন যেকোনো তথ্য জানতে এই চ্যাট বটকে প্রশ্ন করলে উত্তর মিলছে কয়েক সেকেন্ডে।যেখানে কোন তথ্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে খুঁজে পেতে কয়েক মিনিট সময় লেগে যায় সেখানে এই চ্যাট বট মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্য সঠিক উত্তর দিয়ে দেয়।তবে এই চ্যাট বটেরও কিছু লিমিটেশন আছে সেইগুলোও আমি আমার এই লেখায় আলোচনা করব।

চ্যাট বট কি?

চ্যাট বট মূলত একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম/সফটওয়্যার যাকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডাটা দিয়ে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়ে থাকে।যখন আমরা আমাদের কোন ডিভাইসের (মোবাইল,কম্পিউটার,ট্যাবলেট) মাধ্যমে এই চ্যাট বট গুলো আক্সেস করে তাদের কোন প্রশ্ন করি তখন তাদের যে ডাটা গুলো দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিলো সেই ডাটা থেকে আমাদের করা প্রশ্নর ধরনের উপরে নির্ভর করে ডাটা কালেক্ট করে তার নিজের মত (পড়ুন মানুষের মত) করে উত্তর দেয়।

চ্যাট জিপিটি কি?

ওপেন এআই এর চ্যাট জিপিটির পূর্ণ রূপ হল জেনারেটিভ প্রি-ট্রেনড ট্রান্সফরমার।অর্থাৎ এর নাম দিয়েই বুঝানো হয়েছে যে, পূর্বে অনেক ডাটার মাধ্যমে ট্রেনিং করানো হয়েছে এটা সেই রকমের একটা ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল।এবং এই চ্যাট বটকে আমরা যখন কোন প্রশ্ন করি তখন সে তার পূর্বের ট্রেইনিং ডাটা থেকে থেকে তথ্য নিয়ে তার মেশিং লার্নিং মডেল এবং ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের সমন্বয়ে কোন কিছুর সঠিক উত্তর আমাদের প্রদান করে।

কে কখন চ্যাট জিপিটি তৈরি করেছিল?

২০১৫ সালে ধন কুবের ইলন মাস্ক এবং স্যাম অল্টম্যান প্রথমে চ্যাট জিপিটি তৈরির কাজ শুরু করেছলি।ওপেন এআই এর চ্যাট বটটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর আর এই কারনে সে যেকোনো বিষয়ে গুগল এর চাইতে অনেক ভালো উত্তর দিতে পারে।টেক দুনিয়ার পাশাপাশি বর্তমানে গুগলেরও চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই চ্যাট জিপিটি।আর এই কারনেই গুগল তাদের নিজস্ব চ্যাট বট বার্ড নিয়ে এসেছে।

চ্যাট জিপিটি এবং বার্ড কোনটা সেরা?

আমি চ্যাট জিপিটি এবং বার্ড দুইটা চ্যাট বটই ব্যাবহার করে দেখেছি এবং আমার কাছে চ্যাট জিপিটি সেরা মনে হয়েছে।কারন যখন আপনি চ্যাট জিপিটিকে কোন প্রশ্ন করেন তখন সে তার মেশিন লার্নিং মডেল এবং ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যাবহার করে আপনার করা প্রশ্নের উত্তর একজন মানুষের মত দিতে পারে।অপরদিকে গুগলের বার্ডকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে সে অন্য ওয়েবসাইট থেকে ডাটা স্ক্রাপ করে এনে আপনাকে দেখায়।এই একটা বিষয়ের জন্যই আমার কাছে গুগল বার্ডের চাইতে ওপেন এআই এর চ্যাট জিপিটি সেরা মনে হয়েছে।

ওপেন এআই এর চ্যাট জিপিটি দিয়ে কি কি করা যায়?

ওপেন এআই এর চ্যাট বট চ্যাট জিপিটি দিয়ে কি করা যায় এটা বলা অসম্ভব তবে এটা দিয়ে আমি যা যা করতে পেরেছি সেগুলো আপনাদের সাথে এখানে শেয়ার করব।মূল কথা হল আপনাকে এই চ্যাট বট ব্যাবহার করতে হবে এবং তাঁকে নানা ধরনের কাজের ব্যাপারে কমান্ড দিতে হবে যদি সে সেই কাজে পূর্বে ট্রেইন করা থাকে তাহলে অবশ্যই সে আপনার কমান্ড অনুসারে কাজ করবে।আর যদি সে পূর্বে থেকে সেই কাজে ট্রেইন না করা থাকে তাহলে সে আপনাকে বলে দিবে যে সে এই কাজে কাজে পূর্বে ট্রেইন পায়নি।

আমি ওপেন আই এর চ্যাট জিপিটি দিয়ে যা যা করতে পেরেছি-

  1. যেকোনো প্রশ্নের উত্তর জিজ্ঞাসা করে জানতে পেরেছি
  2. যেকোনো বিষয়ে আর্টিকেল লেখার জন্য আর্টিকেল এর আউটলাইন তৈরি করতে পেরেছি
  3. প্রাপ্ত আউটলাইন অনুসারে তার কাছে থেকে আর্টিকেল লিখে নিতে পেরেছি
  4. তাঁকে দিয়ে কোডিং (এইচটিএমএল,সিএসএস,জাভা,পিএইচপি,পাইথন ইত্যাদি) করে নিতে পেরেছি
  5. তাঁকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টেবিল তৈরি করে নিতে পেরেছি (প্রয়োজনীয় তথ্য সহ)

ওপেন এআই এর চ্যাট জিপিটির কিছু অসুবিধা

প্রতিটা টেকনোলজির সুবিধার পাশাপাশি কিছু অনুবিধা থাকবে এটাি স্বাভাবিক।এবং যত দিন যাবে এই অসুবিধা গুলো সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।আমি নিজে চ্যাট জিপিটি ব্যাবহার করতে যেয়ে যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি সেগুলো হল-

  1. অনেক সময় সে ভুল উত্তর দেয় (আপনার উচিত হবে সে যা উত্তর দিবে সেটা ভেরিফাই করে নেওয়া)।
  2. সে সাম্প্রতিক সময়ের কোন বিষয়ের উত্তর দিতে পারেনা!কারন তাঁকে যদি তার সর্বশেষ ট্রেনিং দেওয়ার পরের দিন থেকে শুরু করে আজকে পর্যন্ত কোন তথ্যর উত্তর দিতে বলেন তাহলে সেটা সে দিতে পারেনা।
  3. অনেক সময় তাঁকে আর্টিকেল লিখতে বললে সে অর্ধেক আর্টিকেল লেখার পর লেখা বন্ধ করে দেয়।
  4. সে কোন ছবি অথবা ভিডিও তৈরি করতে পারেনা
  5. চ্যাট জিপিটি বাংলা ভাষায় উত্তর দিত পারেনা এবং সে বাংলা কন্টেন্ট লিখতে পারেনা

আমার শেষ কথা

ওপেন এআই চ্যাট জিপিটির এত সুবিধা থাকা সত্বেও বর্তমানে এই চ্যাট বটকে অনেকেই তাদের ক্যারিয়ারের জন্য বিপদজনক মনে করছে।বিশেষ করে যারা ব্লগিং ক্যারিয়ারে আছে তারা মনে করছে এই চ্যাট বটের জন্য তাদের পেশা সব চাইতে ঝুঁকির মখে পরবে।কিন্তু কথা হল বর্তমান সময় হল টেকনোলোজির সময়।আপনি এই টেকনোলোজির সাথে নিজেকে যত মানিয়ে নিতে পারবেন ততই অন্যদের চাইতে এগিয়ে থাকবেন।