হার্ট অ্যাটাকের আগে শরীর যে সতর্ক সংকেত দেয়


বর্তমান জীবনের দ্রুতগতি, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে হৃদরোগের ঝুঁকি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করে হলেও, তা আসলে আগেই কিছু সতর্কতা সংকেত দিয়ে থাকে। এসব উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন হলে সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।

বুকে চাপ বা ব্যথা: হৃদরোগের সবচেয়ে পরিচিত সংকেত

হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ন লক্ষণ হলো বুকে ব্যথা। এটি ভারী চাপ, টান বা জ্বালাভাবের মতো অনুভূত হতে পারে। এই ব্যথা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা মাঝে মাঝে থেমে গিয়ে আবার ফিরে আসতে পারে। অনেকেই এই উপসর্গকে হালকাভাবে নেন, যা বিপজ্জনক হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট: হৃদযন্ত্র দুর্বল হওয়ার প্রথম দিকের ইঙ্গিত

যদি সাধারণ হাঁটা-চলা বা বিশ্রামের সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে তা হৃদযন্ত্র দুর্বল হওয়ার সংকেত হতে পারে। অনেক সময় এর সঙ্গে বুক ধড়ফড় করার অনুভূতি দেখা যায়। এমন লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

উচ্চ রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরল: নীরব ঘাতক

উচ্চ রক্তচাপ এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম প্রধান কারণ। এই দুটি উপসর্গ অনেক সময় কোনো বাহ্যিক লক্ষণ ছাড়াই শরীরে ক্ষতি করতে থাকে। রক্তনালিতে চর্বি জমে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। নিয়মিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ সেবন অত্যন্ত জরুরি।

অতিরিক্ত ক্লান্তি: হার্টের কর্মক্ষমতা হ্রাসের সংকেত

যদি পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের পরও শরীরের ক্লান্তি না কাটে, তবে তা হৃদপিণ্ডের দুর্বলতার ইঙ্গিত হতে পারে। এটি উপেক্ষা না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

ডায়াবেটিস ও স্থূলতা: হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ায়

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। একইভাবে অতিরিক্ত ওজনও হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, শারীরিক ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতনতা ও সময়মতো সাড়া জরুরি

উল্লিখিত উপসর্গগুলো হৃদরোগের সম্ভাব্য পূর্বাভাস হিসেবে দেখা যেতে পারে। তাই প্রতিটি লক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত চিকিৎসা পরীক্ষা, সুস্থ জীবনধারা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপনই হৃদরোগ প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ