পাকিস্তানের হিন্দুরা ভারতের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে


পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় ভারতের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে দেশটির হিন্দু সম্প্রদায়। কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের করা মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার (১ মে) এই কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষোভকারীরা।

এই প্রতিবাদ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন প্রাদেশিক পরিষদের পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) মনোনীত সংখ্যালঘু সদস্য সঞ্জয় কুমার। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন নারী-পুরুষ উভয়েই, যারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং ভারতবিরোধী প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার বহন করেন।

বিক্ষোভকারীরা কোয়েটার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সমবেত হন। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সঞ্জয় কুমার। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায় দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছে। ভারত যদি আগ্রাসনের পথে হাঁটে, তবে এক কোটির বেশি হিন্দু নাগরিক সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়াবে।”

সঞ্জয় কুমার আরও বলেন, “পাকিস্তান কখনোই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না। বরং এমন হামলার পেছনে ভারতের উদ্দেশ্য হচ্ছে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হেয় প্রতিপন্ন করা।” তার মতে, ভারতের এসব মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী নেত্রীরাও ভারতের সাম্প্রতিক পানি সরবরাহ বন্ধের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, “পানিচুক্তি লঙ্ঘন করে পানি বন্ধ করা শুধু আন্তর্জাতিক আইন নয়, মানবাধিকারেরও লঙ্ঘন। এটি একটি নরম আগ্রাসনের প্রকাশ।”

তারা জানান, ভারতের এমন পদক্ষেপ শুধু কূটনৈতিক অনভিপ্রেত আচরণ নয়, বরং এটি পরিবেশ ও মানবজীবনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, সিন্ধু চুক্তির প্রতি ভারতের দায়িত্বশীল আচরণ দেখানো উচিত, যা আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী বাধ্যতামূলক।

সমাবেশটি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। আয়োজকরা জানান, ভারতের ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও তারা প্রতিবাদ জানিয়ে যাবেন।

পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের এমন প্রতিবাদ প্রমাণ করে যে, তারা জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ