প্রধান আসামি আদালতে আইনজীবী আলিফ হত্যার বর্ণনা দিলেন

চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কিরিচ দিয়ে কোপানোর কথা স্বীকার করেছেন এ মামলায় গ্রেফতার প্রধান আসামি চন্দন দাস (৩৫)। রবিবার (৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথা স্বীকার করেন।

আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিএমপির কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ আদালতে তোলা হলে চন্দন দাস আইনজীবী আলিফ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে আইনজীবীকে হত্যার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেন চন্দন।

এসি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘জবানবন্দিতে চন্দন নিজে কিরিচ দিয়ে আইনজীবীকে কোপানোর কথা স্বীকার করেন। বলেছেন, এ মামলার অপর আসামি রিপন আইনজীবীর ঘাড়ে পরপর দুটি কোপ দিয়েছে। এ ছাড়াও আইনজীবীকে মারধর ও কোপানোর সময় তার সঙ্গে থাকা ১২ জনের নাম বলেছেন আদালতে। বাকিদের নাম ওই মুহূর্তে মনে করতে পারেননি বলে আদালতকে জানিয়েছেন।’

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় ঘটনার দিন ভিডিও ফুটেজ দেখে চন্দন দাসকে চিহ্নিত করা হয়। সেদিন কমলা রঙের টি-শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত চন্দনকে কিরিচ হাতে সাইফুলকে কোপ দিতে দেখা গেছে। চন্দনের মাথায় ছিল হেলমেট। এ হেলমেট সড়কে পার্কিংয়ে রাখা মোটরসাইকেল থেকে নিয়েছিল।

আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে সেখানকার রেলওয়ে স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে। চন্দন চট্টগ্রাম নগরীর কোতয়ালি থানাধীন বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির মেথরপট্টি এলাকার মৃত ধারী দাসের ছেলে।

পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে চন্দনকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নাকচ করে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরীফুল ইসলাম। ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজনভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালতপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান। হামলা করে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করেছে। এসব ঘটনায় একটি হত্যাসহ ছয়টি মামলা করা হয়। সেগুলোর মধ্যে তিনটি মামলা করেছে পুলিশ।

আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার ১ নম্বর আসামি চন্দন। এ মামলায় পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

নিউজ সোর্স: বাংলা ট্রিবিউন