আপনি যদি পূর্বে কোন চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে মানতেই হবে যে ইন্টারভিউ এর সময় একেকজন কে একেক রকমের প্রশ্ন করা হলেও প্রায় সবাইকে একটি কমন প্রশ্ন করা হয়ে থাকে সেটা হল আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন।এই প্রশ্নের উত্তর আপনি কিভাবে দিচ্ছেন তার উপরেই চাকরিদাতা সিদ্ধান্ত নিবে আপনাকে সে চাকরি দিবে নাকি দিবেনা।সুতরাং আপনাকে এই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিলে চাকরিদাতা খুশি হয় সেটা আপনাকে জানতে হবে।
আমি আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে চাকরির ইন্টারভিউ বোর্ডে করা আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন এই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিতে হয় সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।তাহলে চলুন অযথা কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
কেন ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন এই প্রশ্নটি করা হয়?
আপনার নিজের সম্পর্কে বলুন এই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিতে হয় সেটা জানার আগে আমাদেরকে জানতে হবে কেন এই প্রশ্নটি ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া সকলকেই করা হয়।আর এই কারনটি জানতে পারলে আমাদের জন্য উত্তর দেওয়াও অনেক সহজ হয়ে যাবে।
ইন্টারভিউ বোর্ডে এই প্রশ্ন করার প্রধান কারন ইন্টারভিউ কর্তা আপনার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভাবে জানতে চায়।আপনি নিজেকে কতটা সহজ ভাবে অন্য কারও সামনে উপস্থাপন করতে পারেন সেই বিষয়ে সে ধারনা পেতে চায় এবং সর্বপরী সে ইন্টারভিউ এর মূল প্রশ্নে যাওয়ার আগে আপনার ভিতরে থাকা সকল জরতা দূর করার জন্যই মূলত এই প্রশ্নটি করে থাকে যেন আপনার ইন্টারভিউ এর মূল প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিতে কোন জরতা কাজ না করে।
আমরা উপরের পারাগ্রাফ থেকে জানলাম কেন ইন্টারভিউ বোর্ডে সকলকেই এই একই প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।এবার আমরা জানব আপনি কিভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দিলে সেটা চাকরিদাতা ব্যাক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান পছন্দ করবে।
আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন এই প্রশ্নের উত্তর যেভাবে দিতে হবে
এখানে যেহেতু প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনার নিজের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে সুতরাং এখানে আপনার নিজের বাহিরে কোন কথা বলা যাবেনা।তবে এই প্রশ্নের উত্তর যখন দিবেন তখন আপনাকে খুব ভালোভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন আপনাকে তাঁরা চাকরি দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।আমি এখানে এই প্রশ্নের উত্তরে কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না সেই সব বিষয়ে আলোচনা করব।
এই প্রশ্নের উত্তরে যে বিষয়গুলো বলা যাবে
আপনি যখন এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শুরু করবেন তখন অবশ্যই আপনি নিজেকে দিয়ে বলা শুরু করবেন,এরপরে আপনার স্কুল,কলেজ,ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে বলবেন।এবং কোন কোন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন সেইগুলাও বলতে হবে।আপনি যদি পড়াশোনার সময়ে কোন সাফল্য অর্জন করে থাকেন সেসব সম্পর্কে বলতে হবে।উধাহরন সরূপঃ আপনি যদি পড়াশোনা সময়ে কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন অথবা কোন প্রতিযোগিতায় প্রথম অথবা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে থাকেন সেসব এখানে যুক্ত করতে পারেন।
আবার আপনি যদি আগে কোন চাকরি করে থাকেন সেই সম্পর্কে বলতে পারেন।আপনি আগের চাকরিতে কি কাজ করতেন সেই সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করুন।আপনি আপনার যে ভালো গুন গুলো সম্পর্কে তাঁদের বললেন সেইগুলার প্রমান উপস্থাপন করুন তাঁদের সামনে।
অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে কোন মানুষের শুধু ভালোগুন থাকবে এটা একবারেই অসম্ভব একটি ব্যাপার।সুতরাং ভালগুন সম্পর্কে বর্ণনা করার পর তাঁদেরকে আপনার একটি দুর্বলতা সম্পর্কে বলুন এবং সাথে বর্ণনা করুন সেই দুর্বলতা দূর করার জন্য আপনি কিভাবে চেষ্টা করছেন। যেমনঃ আপনি বলতে পারেন যে আপনি অনেক মানুষের সামনে কথা বলতে সামান্য নার্ভাস হয়ে জান।আর কিভাবে এই সমস্যা দূর করার চেষ্টা করছেন এটা তাঁদেরকে বুঝানোর জন্য বলতে পারেন বর্তমানে আপনার আপনার বন্ধুদেরকে দর্শকদের মত আপনার সামনে বসে রেখে প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করছেন।এভাবে উপরের বিষয় গুলো যথাসম্ভব অল্প সময়ের মধ্য বলার চেষ্টা করতে হবে।
এই প্রশ্নের উত্তরে যে বিষয়গুলো বলা যাবে না
উপরে আমরা জানলাম আপনার নিজের সম্পর্কে বলুন এই প্রশ্নের উত্তরে কি কি বিষয়ে কথা বলব।এখন আমরা জানবো যে এই প্রশ্নর উত্তরে কোন বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলব না।আপনাকে যখন চাকরির ইন্টারভিউ এর সময় প্রশ্ন করা হচ্ছে আপনার নিজের সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন তখন অবশ্যই আপনার বাবা-মা,আপনার পরিবারের সদস্য সংখ্যা কতজন,তাঁরা কে কি করছে এই সকল বিষয়ে কথা না বলা।
আবার আপনি সেই প্রতিষ্ঠানে যে পদের জন্য চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেছেন সেই পদের সাথে কোন সম্পর্ক নাই এমন কোন বিষয়ে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বলা যাবে না।মূলকথা হল আমাদেরকে এই প্রশ্নের উত্তর উপরে আলোচিত বিষয়গুলোর কথা স্মরণ রেখে দিতে হবে।
শেষ কথা
আমরা আমাদের নিজের সম্পর্কে সকল তথ্যই জানি।আপনার নিজের কোন কথা আপনার অজানা নয়।আপনি নিশ্চয় জানেন যে কোন বিষয়গুলো নিয়ে কারও সাথে কথা বলা যাবে আবার কোন বিষয়গুলো অন্যদের বলা যাবেনা।আবার আমাদের নিজের বিষয়ে সকল তথ্যই নিজেদের জানা থাকলেও সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পাড়ার কারনে অন্যদের কাছে সেটা বিরক্তিকর হয়ে উঠে।
আরও পড়ুনঃ চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার আগে কিভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত?
আমার আজকের আর্টিকেলটি লেখার মূল উদ্দেশ্যই ছিল যে আপনাকে যখন ইন্টারভিউ বোর্ডে জিজ্ঞাসা করা হবে যে আমাদেরকে আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন।তখন সেই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে তাঁদের সামনে উপস্থাপন করবেন সেই বিষয়ে আপনাকে জানানো এবং আমি মনে করি আমি আমার লেখার মাধ্যমে আপনাদের সামনে সেটা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছি।