বর্তমানে কোম্পানি গুলো তাদের ছোট ছোট কাজ করে নেওয়ার জন্য ফুল টাইম কোন কর্মী নিয়োগ না দিয়ে পার্ট টাইম কর্মী নিয়োগ করতে বেশী পছন্দ করে।এর কারন হল তারা যে কাজের জন্য পার্ট টাইম কর্মী নিয়োগ করে সেই কাজ গুলো খুব অল্প কিছু দিন অথবা কয়েক মাসের জন্যই তাদের প্রতিষ্ঠানে থাকে।আর এই অল্প সময়ের জন্য কোন স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য মোটেও লাভজনক নয়।আর এই কারনেই তারা এই কাজ গুলো করার জন্য পার্ট টাইম চাকরির অফার করে থাকে।
আজকের এই লেখার মাধ্যমে আমরা জানবো যে আপনি যদি একজন ছাত্র হোন তাহলে কোন ধরনের পার্ট টাইম চাকরি গুলো আপনার জন্য ভালো হবে।অর্থাৎ আপনার কোন ধরনের কাজ গুলো করলে এই কাজের প্রভাব আপনার পড়ালেখার উপরে পরবে না।তাহলে চলুন আপনার জন্য উপযুক্ত পার্ট টাইম চাকরি গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
একজন ছাত্র যে ধরনের পার্ট-টাইম চাকরি গুলো করতে পারে
বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনেক রকমের পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ তৈরি করেছে।কিন্তু কেউ যদি ছাত্র হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য সব ধরনের পার্ট টাইম চাকরি করার সুযোগ থাকে না।আমরা এখানে সেই পার্ট টাইম চাকরি গুলো সম্পর্কে জানব যেগুলো একজন ছাত্র তার পড়াশোনার পাশাপাশি খুব সহজেই করতে পারে।
ছাত্রদের জন্য উপযোগী পার্ট টাইম চাকরি গুলো হল-
- কল সেন্টার সহকারী
- বিক্রয় সহকারী
- ড্রাইভার এজেন্ট
- ওয়েটার
- পার্ট টাইম শিক্ষক
- ভাষা ট্রেইনার
- ভ্রমন গাইড
- কপি রাইটার এবং
- ডিজিটাল মার্কেটিং সহকারী
আমরা এখানে সর্বমোট নয়টি পার্ট টাইম চাকরির নাম জানলাম যেগুলো একজন ছাত্র চাইলেই তার পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যেতে পারে।আমি এখন আপনাদের সাথে এই পার্ট টাইম চাকরি গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
(১) কল সেন্টার সহকারী
বর্তমানে মোবাইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের গ্রাহকদের ২৪ ঘণ্টা নিরিবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করার জন্য কল সেন্টারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করে থাকে।আর এই কল সেন্টারে সেবা প্রদান করার জন্য প্রয়োজন হয় কল সেন্টার সহকারী।আপনার যদি অনেক বেশী ধৈর্য থাকে এবং আপনি যদি ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার কাজে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনি চাইলেই পড়াশোনার পাশাপাশি কল সেন্টার সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করতে পারেন।
(২) বিক্রয় সহকারী
আপনি যদি মানুষকে কথা বলে পটিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার জন্য বিক্রয় সহকারী হিসাবে কাজ করার ভালো সুযোগ আছে।এই ধরনের পার্ট টাইম চাকরি গুলো মূলত বড় বড় প্রতিষ্ঠানের শো-রুম গুলো থেকে অফার করা হয়ে থাকে।তবে আপনি যদি বিক্রয় সহকারী হিসাবে পার্ট টাইম চাকরি করতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই শুদ্ধ ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে।
(৩) ড্রাইভার এজেন্ট
আপনার যদি আগে থেকেই গাড়ী চালানোর অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে উবার,পাঠাও এর মত রাইডিং সেবা গুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি ড্রাইভার হিসাবে পার্ট টাইম কাজ করে ভালো টাকা আয় করতে পারেন।
(৪) ওয়েটার
আপনার যদি ফুড ম্যানেজমেন্টে ভালো দক্ষতা থাকে।অর্থাৎ আপনি যেকোনো অনুষ্ঠানে খাবার খাওয়ানোর জন্য অনেক পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট অথবা কফি শপে ওয়েটার এর পার্ট টাইম কাজ আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে।
(৫) পার্ট টাইম শিক্ষক
আগের দিনে বাসায় যেয়ে পড়াতে হত,এখনও অনেকেই পড়ান।কিন্তু বর্তমানে কোচিং সেন্টারের প্রসারের ফলে আপনি চাইলেই বাসার পরিবর্তে কোচিং সেন্টার গুলোতে পার্ট টাইম শিক্ষক হিসাবে কাজ করতে পারেন।একজন ছাত্রের জন্য এই পার্ট টাইম শিক্ষকের চাকরি খুবই উপকারী।কারন সে নিজেও পড়াশোনা করে আবার কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করার কারনে তার পড়াশোনা সব সময় চর্চার মধ্যই থাকে।
(৬) ভাষা ট্রেইনার
আপনার যদি বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য যেকোনো ভাষার উপরে ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি সেই ভাষা অন্যদের শিখানোর পার্ট টাইম চাকরি করতে পারেন।বর্তমানে দেশের প্রায় সকল শহরে বিদেশী ভাষা শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করে সেখানে ভাষা ট্রেইনার হিসাবে পার্ট টাইম চাকরি শুরু করতে পারেন।
(৭) ভ্রমন গাইড
আপনার যদি ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে তাহলে আপনি আপনার এই ঘুরে বেড়ানোর শখকে পেশায় পরিণত করতে পারেন।বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের গেস্টদের সাথে ভ্রমন গাইড দিয়ে দেন যাতে করে তাদের গেস্ট যেখানে বেড়াতে যাচ্ছে সেই জায়গা সম্পর্কে ভালো ভাবে বুঝতে পারেন।তবে আপনি যদি ভ্রমন গাইড হিসাবে কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে যাদের জন্য গাইড হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হবে তারা যে জায়গায় বেড়াতে যাবে সেই জায়গা সম্পর্কে আপনার অবশ্যই খুব ভালো ধারনা থাকতে হবে।
(৮) কপি রাইটার
আপনার যদি লেখার হাত অনেক ভালো হয়।অর্থাৎ, আপনি যদি কোন আর্টিকেল লিখেন এবং সেটা সবাই অনেক মনোযোগ এবং আনন্দের সাথে পড়ে তাহলে আপনি কপি রাইটার হিসাবে বিভিন্ন মার্কেট প্লেস,ডিজিটাল এজেন্সিতে পার্ট টাইম রাইটার হিসাবে কাজ করতে পারেন।
(৯) ডিজিটাল মার্কেটিং সহকারী
বর্তমানে প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিষ্ঠানের পণ্য অথবা সেবার মার্কেটিং সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট গুলোতে করে থাকে।বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ফেসবুকে তাদের মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তাদের প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল পেজ এবং গ্রুপে।আপনার যদি ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপ সম্পর্কে খুব ভালো ধারনা থেকে থাকে তাহলে আপনি এই প্রতিষ্ঠান গুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং সহকারী হিসাবে পার্ট টাইম চাকরি শুরু করতে পারেন।
আমার শেষ কথা
আমি আপানাদের সাথে উপরে আলোচনার মাধ্যমে যে পার্ট টাইম চাকরি গুলো পড়াশোনারত একজন ছাত্রের জন্য উপযুক্ত সেই পার্ট টাইম চাকরি গুলো সম্পর্কে একটা ন্যূনতম আইডিয়া দেওয়ার চেষ্টা করেছি।আমি আশা করি আপনি যদি পার্ট টাইম চাকরি করতে চান তাহলে এই চাকরি গুলোর থেকে যেকোনো একটা বেছে নিয়ে আপনি কাজ করা শুরু করবেন।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল!