রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্ট থেকে দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আগামী রোববার (৪ মে) মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এই আদেশ দেন। এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চেম্বার আদালত চিন্ময়ের জামিন স্থগিত করেন, যা দুপুর ২টার দিকে হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছিল। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করায় চেম্বার আদালত তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা। একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আমরা চেম্বার আদালতে আবেদন করি এবং তা মঞ্জুর হয়। কিন্তু পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।”
চেম্বার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে চিন্ময়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে চিন্ময় দাসের নেতৃত্বে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। কয়েকদিন পর, ৩১ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়। মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।
এরপর ২২ নভেম্বর রংপুরে আরও একটি সমাবেশ হয় চিন্ময়ের নেতৃত্বে। এই ঘটনার পর ২৫ নভেম্বর তাঁকে ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরদিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চিন্ময়ের কারাবন্দিত্বের দিনেই চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ আদালত চত্বরের বাইরে নিহত হন।
পরে ২ জানুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করেন। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে, ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চায়, কেন তাঁকে জামিন দেওয়া হবে না। দীর্ঘ শুনানি শেষে গতকাল হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করে, যা পরে চেম্বার আদালতে স্থগিত ও আবার প্রত্যাহার হয়।
আগামী রোববার এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ