এই রসালো ফলে থাকা পানি ও প্রাকৃতিক মিষ্টি স্বাদ শরীরকে এনে দেয় প্রশান্তি ও সতেজতা। কিন্তু এই মৌসুমে বাজারে বেড়ে চলেছে এক উদ্বেগজনক প্রবণতা—ভেজাল তরমুজ বিক্রি। বিভিন্ন বিক্রেতা অধিক লাভের আশায় তরমুজে কৃত্রিম রং ও ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করছেন, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
প্রকৃত তরমুজের ভিতরের রং তুলনামূলকভাবে হালকা লাল বা গোলাপি হলেও এখন অনেক তরমুজ অস্বাভাবিক উজ্জ্বল লাল বা টকটকে দেখায়। এসব তরমুজে ‘ম্যালাকাইট গ্রিন’ বা ‘ইরিথ্রোসিন’ নামক ক্ষতিকর রাসায়নিকের অস্তিত্ব থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এসব কেমিক্যাল শরীরে প্রবেশ করলে লিভার, কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
তরমুজে ভেজাল চেনার ঘরোয়া উপায়
১. রঙে প্রাকৃতিকতা খুঁজুন
একটি আসল তরমুজের ভিতরের রঙে সামান্য অসমতা থাকবে। খুব বেশি উজ্জ্বল বা চোখ ধাঁধানো লাল রং মানেই তাতে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। এটি কৃত্রিম রঙের ব্যবহার নির্দেশ করতে পারে।
২. পানি পরীক্ষায় মিলবে প্রমাণ
এক চামচ তরমুজের পাল্প এক গ্লাস পানিতে মেশান। যদি পানি তৎক্ষণাৎ লালচে হয়ে যায়, বুঝতে হবে এতে কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে। প্রকৃত তরমুজ কখনোই পানিতে রঙ ছাড়ে না।
৩. তুলা দিয়ে ঘষে দেখুন
একটি ভেজা তুলা নিয়ে তরমুজের উপর হালকাভাবে ঘষে দেখুন। যদি তুলায় লালচে দাগ উঠে আসে, তাহলে সেটি স্পষ্টতই ভেজাল তরমুজ। প্রকৃত তরমুজের রস স্বচ্ছ এবং রঙহীন হওয়া উচিত।
৪. বীজের রং পর্যবেক্ষণ করুন
তরমুজের প্রকৃত বীজ সাধারণত কালো বা বাদামি হয়। যদি বীজে গোলাপি বা লালচে আভা দেখা যায়, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে ভেতরের কৃত্রিম রঙ বীজেও প্রভাব ফেলেছে।
৫. স্বাদ ও গঠনের পার্থক্য
আসল তরমুজ মিষ্টি ও রসালো এবং তার গঠন সামান্য দানাদার হয়ে থাকে। কিন্তু যদি তরমুজ খেতে তিক্ত, ধাতব স্বাদযুক্ত বা গঠন অস্বাভাবিক শক্ত কিংবা অতিরিক্ত নরম হয়, তাহলে এটি ভেজাল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।
সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন
এই গরমে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চাইলে তরমুজ কেনার সময় কিছুটা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। পরিচিত উৎস থেকে তরমুজ কেনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন, সামান্য অসতর্কতা আপনার ও পরিবারের স্বাস্থ্যকে বড় ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ