ব্লগিং করে আয় করার সেরা কিছু উপায় (এক্সপার্ট অপিনিয়ন)

ব্লগিং বলতে কি বুঝায়?ব্লগিং বলতে মূলত কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে অথবা ব্লগে লেখালিখি করাকে বুঝায়।যেমন আপনি এই ওয়েবসাইটে এসেছেন এটাও একটা ব্লগ।আর আপনি এই যে লেখাটা পড়ছেন এটাকে বলে হয় ব্লগ পোস্ট।অর্থাৎ, আমার বলতে পারি কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্রিক লেখালিখির জন্য ইন্টারনেট ভিত্তিক কোন ওয়েবসাইট অথবা ব্লগে আপনি লেখালিখি করবেন তখন সেটাকে ব্লগিং বলা হবে।

আপনি হয়ত অনেকের কাছেই জেনেছনে যে ব্লগিং বা লেখালিখি করেও অনলাইন থেকে আয় করা যায়।তবে কিভাবে করা যায় সেই সম্পর্কে হয়ত আপনি বিস্তারিত কোন তথ্য জানেন না।এই লেখাটি আপনি শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়লে ব্লগিং করে কি কি মাধ্যমে থেকে আয় করা যায় সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ব্লগিং শুরু করার জন্য আপনার কি কি দরকার হবে?

আপনি যদি ব্লগিং করে টাকা আয় করতে চান তাহলে আপনার কিছু পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে।যেমনঃ আপনি যখন ব্লগিং শুরু করবেন তখন আপনাকে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট চালু করতে হবে (এই কাজটি আপনি চাইলে বিভিন্ন ফ্রি প্লাটফর্মেই শুরু করতে পারেন কিন্তু আমি চাইব আপনি পেইড মাধ্যমেই শুরু করেন)।

ব্লগিং করার জন্য ওয়েবসাই  চালু করার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ডোমেইন নাম এবং ডোমেইন কানেক্ট করে আপনার ব্লগটি লাইভ করার জন্য একটি হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে হবে।এরপরে যেকোনো একটি সিএমএস (কন্টেন্ট মানেজমেন্ট সফটওয়্যার) ব্যাবহার করে আপনাকে সাইটটি তৈরি করে নিতে হবে এবং প্রয়োজন অনুসারে কাস্টমাইজেশন করে নিতে হবে।

ডোমেইন এবং হোস্টিং কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?

বর্তমানে আমাদের দেশেই অনেক ভালো ভালো ডোমেইন-হোস্টিং কোম্পানি আছে এবং তাঁরা খুব ভালো সার্ভিস প্রদান করে আসছে।আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার উচিত হবে দেশী কোন কোম্পানি থেকে ডোমেইন-হোস্টিং কিনে সাইট তৈরি করা।আর যদি আপনি দেশ থেকে কিনতে না চান তাহলে বাহিরের যেকোনো কোম্পানি থেকে ডোমেইন-হোস্টিং কিনে নেওয়া।আমি নিজে দেশী কোম্পানির মধ্য ExonHost এবং বিদেশী কোম্পানির মধ্য নেমচিপের সার্ভিস ব্যাবহার করে আসছি প্রায় ৭-৮ বছর ধরে।

ব্লগিং কি বিষয়ে শুরু করব?

আপনি কি বিষয়ে ব্লগ তৈরি করবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনাকে ডোমেইন কেনার আগেই নিতে হবে।কারন ডোমেইন নাম আপনার ব্লগিং এর বিষয়ের সাথে মিল রেখে নিলে এসইও এর ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়।

আপনি যে বিষয়ে এক্সপার্ট সেই বিষয়ে ব্লগিং করা হল সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ।কারন আপনি যে বিষয়ে এক্সপার্ট সেই বিষয়েই আপনি ভালো লিখতে পারবেন এটাই স্বাভাবিক।সুতরাং আপনি এক্সপার্ট নন এমন কোন বিষয়ে ব্লগিং শুরু করবেন না।

উধাহরন সরূপ বলা যেতে পারে আপনি বাইসাইকেল বিষয়ে খুবই এক্সপার্ট।তাহলে আপনার উচিত হবে বাইসাইকেল নিয়েই ব্লগিং শুরু করা।এখন আপনাকে আপনার ব্লগে বাইসাকেল রিলেটেড কয়েকটি ক্যাটেগরির মাধ্যমে ব্লগ শুরু করা।যেমনঃ আপনার ব্লগের ক্যাটেগরি গুলো হতে পারে রোড বাইক,পর্বত বাইক,গ্রাভেল বাইক ইত্যাদি।এখন আপনি যে কয়টা ক্যাটেগরি নিয়ে কাজ করতে চান সেই কয়টা ক্যাটেগরি তৈরি করে নিয়ে ব্লগিং শুরু করা।

ব্লগে ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যাবে?

আমরা যারা ব্লগ সাইট তৈরি করে ব্লগিং শুরু করি তাদের মেইন উদ্দেশ্যই থাকে একটা পর্যায়ে যেয়ে আমাদের ব্লগ থেকে টাকা আয় করা।আমি এখন আপনাদের সাথে এখানে আলোচনা করব কিভাবে আমরা আমাদের ব্লগে ব্লগিং করে টাকা আয় করতে পারি।আমি শুধু এখানে টাকা আয় করার পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে আলোচনা করব।

(১) বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্লগ থেকে আয়

প্রায় সকল ব্লগ সাইটেই বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করা হয়।আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ভালো পরিমানের টাকা আয় করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে গুগল অ্যাডসেন্স।আপনি আপনার সাইটকে গুগলের পলিসি মেনে তৈরি করে অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করলে অ্যাডসেন্স আপনার ব্লগটি রিভিউ করে আপনি যদি অ্যাডসেন্স পাওয়ার উপযুক্ত হোন তাহলে অ্যাডসেন্স আপ্প্রুভাল দিয়ে দিবে এবং আপনার সাইটে অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে। যখন আপনার ওয়েবসাইটের কোন ভিসিটর আপনার সাইট ভিসিট করবে এবং তাদের পছন্দের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তখন আপনি প্রতি ক্লিক হিসাবে টাকা পাবেন।

(২) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্লগ থেকে আয়

এই পদ্ধতিতে মূলত আপনাকে আপনার ব্লগে বিভিন্ন প্রোডাক্ট অথবা সেবার সম্পর্কে রিভিউ লিখতে হবে।যখন আপনার কোন ভিসিটর এই প্রোডাক্ট অথবা সেবার রিভিউ পড়ে কোন পণ্য অথবা সেবা ক্রয় করবে তখন আপনি সেই ক্রয় মূল্য থেকে আপনি যে কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন সেই কোম্পানির নিয়মানুসারে কমিশন পাবেন।আমাদের দেশেই অনেকই অ্যামাজন,ওয়ালমার্ট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাস শেষে ভালো পরিমানের টাকা আয় করছে।

(৩) সিপিএ মার্কেটিং করে আয়

সিপিএ মার্কেটিং ও অনেকটা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতোই।এখানেও আপনাকে কোন ডিজিটাল প্রোডাক্ট অথবা সেবা বিক্রি করতে হবে এবং আপনার ওয়েবসাইট থেকে রেফার করে আপনি যে প্রতিষ্ঠানের অথবা প্রোডাক্টের সিপিএ মার্কেটিং করবেন সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে অথবা সেই প্রোডাক্টের লিংকে ভিসিটর পাঠাতে হবে।এখন আপনার পাঠানো ভিসিটররা যখন কোন প্রোডাক্ট অথবা সেবা ক্রয় করবে তখন আপনি নির্দিষ্ট হাড়ে কমিশন পাবেন।

আরও পড়ুনঃ সিপিএ মার্কেটিংয়ের অফার প্রমোট করার সেরা পাঁচটি ফ্রি পদ্ধতি

(৪) গেস্ট পোস্ট বিক্রি করে আয়

আপনার ব্লগে যখন অনেক বেশী ভিসিটর আশা শুরু হবে এবং আপনি সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে ভালো র‍্যাঙ্ক পাওয়া শুরু করবেন তখন দেখবেন আপনার সাইটে রিলেটেড অন্য সাইটের মালিকরা আপনাকে মেইল করবে তাদের ওয়েবসাইটে লিংক নেওয়ার জন্য।তবে তাঁরা এটা ফ্রিতে নিবেনা।এর জন্য তাঁরা আপনাকে ভালো পরিমানের টাকাও দিবে আবার সাথে আর্টিকেলও দিবে।আমার পরিচত একজন তার সাইটে প্রতিটি গেস্ট পোস্ট করার জন্য ৫০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত চার্জ করে থাকে।

শেষ কথা

আমরা উপরে ব্লগিং শুরু করার প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানলাম।এবং কিভাবে এবং কি উপায়ে আমারা আমাদের ব্লগে ব্লগিং করে টাকা আয় করতে পারব সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য জানলাম।আপনার যদি উপরে আলোচনার বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানান।