ওয়েবসাইটে ভিসিটর পাচ্ছেন না?প্রয়োগ করুন এই পাঁচটি পদ্ধতি

আপনি কি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন এবং খুব যত্ন সহকারে নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করে যাচ্ছেন অথচ ভিসিটরের কোন দেখা নাই?এত পরিশ্রম করে কাজ করে যাচ্ছেন তবু যেন আপনার সাইট একটি মানুষ বিহীন দ্বিপ।যেখানে জীবন ধারন করার জন্য সব কিছু আছে তবু কেউ বসবাস করতে চাইছে না।ঠিক আপনি আপনার ওয়েবসাইটে এত ভালো মানের আর্টিকেল লিখছেন তবু যেন কেউ আসতেই চাচ্ছে না।

সত্যি কথা বলতে যদি কোন ওয়েবসাইটের মালিকের সাথে এমনটা ঘটে থাকে তাহলে সে স্বাভাবিক ভাবেই তার ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এটাই স্বাভাবিক।তবে আপনার সাথে যদি এমনটা হয়েই থাকে তাহলে আমার কাছে মনে হচ্ছে আপনি আর্টিকেল লিখছেন ঠিকই তবে কিছু কিছু ভুল করছেন যেগুলো আপনার চোখে পড়ছে না।কারন আমাদের শুধু ভালো মানের আর্টিকেল লিখলেই হবে না।আর্টিকেল লেখার সময়ে আমাদের এমন কিছু কৌশল প্রয়োগ করতে হবে যেগুলোর মাধ্যমে আমার আমাদের পাবলিশ করা আর্টিকেল গুলোকে আমাদের ওয়েবসাইটে এবং ওয়েবসাইটের ভিসিটরদের জন্য আরও বেশী মানসম্পন্ন করতে পারি।

আমি আমার আজকের এই লেখায় আপনার সাথে এমন পাঁচটি পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব যেগুলোর মাধ্যমে আমরা যখন আমাদের ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল লিখব তখন সেই আর্টিকেল গুলো আরও এসইও ফ্রেন্ডলি করতে পারব।এবং এই পদ্ধতি গুলো অনুসরন করলে আমাদের ওয়েবসাইটের ভিসিটর বাড়বে বলেই আমি আশা করি।তাহলে চলুন মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

যে পাঁচটি পদ্ধতি ব্যাবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের ভিসিটর বাড়াতে পারবেন

(১) সঠিক কী-ওয়ার্ড নির্বাচন করা

আমরা যখন আমাদের সাইটের জন্য কোন আর্টিকেল লেখার সিদ্ধান্ত নিব তখন আমাদের অবশ্যই যেকোনো একটি টপিক নির্বাচন করতে হবে।আর টপিক নির্বাচন করা মানেই সেটা অবশ্যই কোন কী-ওয়ার্ড হবে এবং আমাদের এই কী-ওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে খুব সতর্কতার সাথে।

চলুন কী-ওয়ার্ড নির্বাচন করার জন্য আমরা গুগলে সার্চ করে দেখি।আমারা যদি গুগলে xiaomi note 11 লিখে সার্চ দেই তাহলে সার্চ ফলাফলের প্রথমেই GSMArena এর ওয়েবসাইট আসে যেটা একটি ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইট যেখানে মোবাইল ফোন গুলোর বিস্তারিত তথ্য এবং মূল্য সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়ে থাকে।আমরা ধরে নিলাম আমাদের ওয়েবসাইটও এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করে থাকে কিন্তু আমাদের ভিসিটর টার্গেট দেশ হল বাংলাদেশ।তাহলে কিন্তু আমাদের xiaomi note 11 কী-ওয়ার্ড দিয়ে আমাদের লেখা আর্টিকেল র‍্যানক করাতে অনেক বেশী বেগ পেতে হবে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা র‍্যানক নাও পেতে পারি।কিন্তু আমাদের কী-ওয়ার্ড যদি আমরা পরিবর্তন করে দেই তাহলে হয়তবা আমাদের র‍্যানক পাওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

যেমন আমরা যদি আমাদের পূর্বের কী-ওয়ার্ড পরিবর্তন করে দিয়ে xiaomi note 11 price in bangladesh এই কী-ওয়ার্ড নিই তাহলে কিন্তু সার্চ ফলাফলের পেজে আমরা অনেক পরিবর্তন দেখতে পারি এবং এই কী-ওয়ার্ড এর সাথে আরও কিছু প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড ব্যাবহার করে আমাদের আর্টিকেল লিখি তাহলেই আমরা অনেক সহজে আমাদের লেখা আর্টিকেলটি র‍্যানক করতে পারি এবং সেই কী-ওয়ার্ড এর মাধ্যমে আমাদের ওয়েবসাইটে আমাদের টার্গেট ভিসিটর নিয়ে আসতে পারি।

সুতরাং আমাদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লেখার পূর্বেই আমাদের ওয়েবসাইটের জন্য উপযুক্ত এবং সঠিক কী-ওয়ার্ড সিলেক্ট করতে হবে।একটা বিষয় সব সময় মাথায় রাখবেন যে শর্ট কী-ওয়ার্ড এর চাইতে লং-টেইল কী-ওয়ার্ড ভালো কাজ করে।আপনি যদি কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে যেয়ে কোন লং-টেইল কী-ওয়ার্ড পেয়ে যান তাহলে অবশ্যই সেই কী-ওয়ার্ড নিয়ে কাজ করবেন।

(২) আর্টিকেল এর জন্য একটি আকর্ষণীয় শিরোনাম ব্যাবহার করা

আমরা যখন গুগলে কোন কিছু সার্চ করি তখন কিন্তু আমরা ওয়েবসাইটের নাম না দেখে শুধু আর্টিকেলের শিরোনাম দেখে যে শিরোনামটি ভালো লাগে সেই ওয়েবসাইট ভিসিট করে থাকি।কারন আমারা শিরোনাম পড়েই বুঝতে পারি যে এটা কি সম্পর্কিত আর্টিকেল।

আবার আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটে চলে যাই তখন একটা আর্টিকেল পড়ার পর যদি অন্য কোন আর্টিকেলের শিরোনাম পড়ে আমাদের ভালো লাগে তখন কিন্তু সেই আর্টিকেলও পড়ি।সুতরাং আমরা বলেত পারি যে একটি আকর্ষণীয় আর্টিকেল শিরোনাম শুধু আমাদেরকে সার্চ ইঞ্জিন থেকেই ভিসিটর এনে দেয় না একই সাথে কোন ভিসিটর আমাদের ওয়েবসাইটে আসে তাঁকে ইন্টারঅ্যাকশন নিতেও বাধ্য করে।অতএব আমাদের অবশ্যই সতর্কতার সাথে আমাদের ওয়েবসাইটের শিরোনাম লিখতে হবে যেন সেটা দেখে/পড়ে আমাদের ভিসিটর সেই আর্টিকেল পড়তে চায়।

(৩) একই ধরনের পোস্টের সাথে ইন্টারনাল লিংক করা এবং আর্টিকেলে শেষে রিলেটেড আর্টিকেল অপশন যোগ করা

আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটে একের পর এক পোস্ট লিখছেন এবং নিয়মিত পাবলিশ করছেন তখন অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটে থাকে একই ধরনের অন্য আর্টিকেল গুলোর সাথে ইন্টারনাল লিংক করবেন।এটা যেমন আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ভ্যালুয়েবল করে তুলবে একই সাথে আপনার সাইটের ভিসিটর এর কাছে আপনার সাইটেট বিশ্বাস যোগ্যতা বাড়াবে।তবে ভুলেও রিলেটেড নয় এমন কোন লেখার সাথে ইন্টারনাল লিংক করবেন না। যেমন ধরেন আপনার লেখা আর্টিকেলের মূল বিষয় হল কম্পিউটার এর র‍্যাম কিভাবে পরিস্কার করতে হয় এর সাথে যদি আপনি কোন হেলথ বিষয়ক পোস্ট এর ইন্টারনাল লিংক করেন তাহলে সার্চ ইঞ্জিন এবং আপনার সাইটের ভিসিটর উভয়ই বিরক্ত হবে।সুতরাং এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

আরও একটি বিষয় আপনি করতে পারেন সেটা হল আপনার সাইটের সিঙ্গেল পোস্টের নিচে যেন অবশ্যই সেই একই ক্যাটাগরি থেকে রিলেটেড পোস্ট দেখায় সেই বিষয়টি আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে।কারন এই অপশন থাকলে আপনার ভিসিটর যখন কোন একটি আর্টিকেল পড়া শেষ করবে সে সেই লেখা পড়া শেষ করার পরে নিচে এসে একই ধরনের আরও পোস্ট দেখতে পারলে সেখানে ক্লিক করে অন্য একটি আর্টিকেল পড়া শুরু করবে।

(৪) ওয়েবসাইটকে করতে হবে ইউজার ফ্রেন্ডলি

আপনি যখন আপনার সাইটের ডিজাইন করবেন তখন আপনার সাইট যেন অবশ্যই ইউজার ফ্রেন্ডলি হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।কখনও ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে তৈরি করা যাবে না।আপনার ওয়েবসাইট কে সার্চ ফ্রেন্ডলি করার জন্য সাইটের হেডারে এবং ফুটারে মেনু রাখতে পারেন।আবার সাইডবাড়ে সর্বশেষ প্রকাশিত আর্টিকেল গুলোর একটা লিস্ট রাখতে পারেন এবং সাইডবারের শুরুতেই একটি সার্চ বক্স রাখতে পারেন যাতে করে খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটের ব্যাবহারকারীরা কোন কিছু খোঁজার জন্য এই সার্চ বক্সটি ব্যাবহার করতে পারে।

আপনি যখন আপনার ওয়েবসাইটকে ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তৈরি করবেন তখন শুধু আপনার ওয়েবসাইটকে আপনার ব্যাবহারকারীরাই পছন্দ করবে না একই সাথে সার্চ ইঞ্জিনও পছন্দ করা শুরু করবে।এসবের পাশাপাশি আপনাকে আরও একটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে সেটা হল আপনার সাইট যেন দ্রুত লোড নেয়।কারন আপনার সাইট কতটা দ্রুত লোড হয় এটা সরাসরি একটি রাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করে।

(৫) নিশ ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

বর্তমান সময়ে প্রায় সকল মানুষই দিনের বেশীরভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাবহার করে।আপনাকে প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার সাইটের নিশ রিলেটেড একটি গ্রুপ খুলে নিতে হবে।এরপরে সেখানে আপনার সাইটের পোস্ট শেয়ার করতে হবে,এবং আপনার নিশ রিলেটেড ছবি,ভিডিও শেয়ার করতে হবে।এভাবে কিছুদিন করার পড়ে অবশ্যই আপনার গ্রুপে আপনি এমন কিছু মেম্বার পেয়ে যাবেন যারা সরাসরি আপনার সাইটের নিশের সাথে সম্পর্কিত।এখন আপনি যখন আপনার সাইটে নতুন কোন আর্টিকেল পাবলিশ করবেন তখন সেই পোস্টের লিংক আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে শেয়ার করলেই আপনার সাইটে ভিসিটর পেয়ে যাবেন।কারন তাঁরা সরাসরি আপনার নিশের সাথে সম্পর্কিত ভিসিটর এবং তাঁরা এই ধরনের কন্টেন্ট পছন্দ করে বলেই আপনার গ্রুপে যোগদান করেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে যেয়েও আপনাকে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।যেমনঃ সব সময় শুধু আপনার ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করবেন না এবং সব সময় প্রমশনাল পোস্ট করবেন না।চেষ্টা করবেন সময় সময় আপনার গ্রুপ মেম্বারদের উপকার হয় এমন লেখা,ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করার।তাঁদের উপকার করার চেষ্টা করলে তাঁদের কাছে আপনার এবং আপনার সাইটের বিশ্বাস যোগ্যতা বাড়বে এবং এটা আপনার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী সুফল বয়ে আনবে।

শেষ কথা

আমি আপনাদের সাথে উপরে যে পাঁচটি পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে আলোচনা করলাম আপনি যদি এই পাঁচটি পদ্ধতি সঠিকভাবে আপনার ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনার ওয়েবসাইটে যেখানে আগে শুন্য ভিসিটর ছিল আপনি এভাবে এক মাস কাজ করলে অবশ্যই আপনার ভিসিটর আশানুরূপ ভাবে বেড়ে যাবে।